কঠোর আন্দোলনের পরিকল্পনা

বিএনপির ঈদ-পরবর্তী ভাবনায় কাউন্সিল ও সিটি নির্বাচন

৮২টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ইতোমধ্যে ৩৩ জেলার নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। বাকিগুলো দ্রম্নত সময়ের মধ্যে করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা কাজ করে যাচ্ছেন

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি রিপোর্ট আপাতত সাংগঠনিক কার্যক্রম বলতে জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি নিয়ে মাঠে রয়েছে বিএনপি। তবে ঈদের পরে জাতীয় কাউন্সিল এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। কাউন্সিল এবং সিটি নির্বাচন শেষ করে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে যেতে চায় বিএনপি। বিএনপির সিনিয়র এক নেতা জানান, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নতুন জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন বিএনপির কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব্বপূর্ণ। এর মধ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন চলমান আছে। ঈদের পরে তা আরও বেগবান হবে। সব বিভাগে সমাবেশ শেষ হওয়ার পরে নেত্রীর মুক্তির দাবিতে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এর বাইরে ঈদের পরে বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল ও সিটি নির্বাচনগুলোর প্রস্তুতি শুরু হবে। চলতি বছরের শেষেরদিকে অথবা নতুন বছরের শুরুতে জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে সংগঠনকে শক্তিশালী করে সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার পরেই জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সূত্র মতে, জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতি একরকম শুরু করেছে বিএনপি। ঈদের পরেই তা দৃশ্যমান হবে। আগামী কাউন্সিলের আগে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন বলে মনে করছেন নীতিনির্ধারকরা। এমনটা ধরে নিয়ে ডিসেম্বরে দলের ৭ম জাতীয় কাউন্সিল করার চিন্তা করছে বিএনপি। সেজন্য দ্রম্নত সাংগঠনিক জেলা শাখা পুনর্গঠনের কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কাউন্সিলে গঠনতন্ত্রে কি ধরনের পরিবর্তন আসবে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ক্ষমতা আরও বাড়ানোর চিন্তা-ভাবনা নিয়ে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নেতারা কাজও করছেন। নতুন কমিটিতে উচ্চ পদগুলোতে অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতা কাদেরকে আনা যায় তা নিয়েও চলছে গবেষণা। সূত্রমতে, জাতীয় কাউন্সিলকে সামনে রেখে ৮২টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ইতিমধ্যে ৩৩ জেলার নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। বাকিগুলো দ্রম্নত সময়ের মধ্যে করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা কাজ করে যাচ্ছেন। যেসব জেলায় কোন্দল রয়েছে সেগুলো নিরসনেও চেষ্টা চলছে। মূল দলের পাশাপাশি কাউন্সিলের আগে ছাত্রদলসহ অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনও পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ঈদের পরপরই ছাত্রদলের কাউন্সিল করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিএনপির কাউন্সিল ভাবনা প্রসঙ্গে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দলের জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এ লক্ষে সাংগঠনিক পুনর্গঠনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে কাউন্সিলের দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বিএনপি সূত্রমতে, ঈদের পরে জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতির পাশাপাশি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে চায় বিএনপি। এজন্য সংশ্লিষ্ট নেতাদের নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাজ করার কথাও বলা হয়েছে। ঈদের ছুটিতেও জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি চালিয়ে যেতে সিটি নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবাইকে কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র এক নেতা জানান, আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ বা আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে তিন সিটিতে ভোট করার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের আভাসের পর থেকেই কাজ শুরু করেছে বিএনপি। ঈদের পরে এর কার্যক্রম আরও বাড়বে। জাতীয় নির্বাচনের মতো সিটি নির্বাচনে যাতে কারচুপি না করতে পারে সে ব্যাপারে এখন থেকেই শক্ত প্রস্তুতি নিতে চায় বিএনপি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব অনেক আগে থেকেই ইতিবাচক। এজন্য আসন্ন তিন সিটির সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাজে মনোযোগ দেয়ার নির্দেশও দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিন সিটি নির্বাচনে কারা প্রার্থী হতে পারেন এর একটি তালিকাও ঠিক করেছেন দলের হাইকমান্ড। এরই মধ্যে উত্তরে তাবিথ আউয়াল দক্ষিণে সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন ও চট্টগ্রামে ডা. শাহাদাত হোসেন দলের হাইকমান্ডের ইতিবাচক ইঙ্গিত পেয়েছেন বলে দলের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা আছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি নির্বাচনমুখী দল। সব নির্বাচনেই অংশ নিতে চায়। আর প্রস্তুতিও থাকে সবসময়। তবে সিটি নির্বাচনের অনেক সময় বাকি আছে। পরিবেশ পরিস্থিতির বিবেচনা করে যথা সময়ে দল সঠিক সিদ্ধান্তই নিবে।