পাবনায় গণপিটুনিতে ২ 'চরমপন্থি' নিহত

প্রকাশ | ১৮ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

পাবনা প্রতিনিধি/সাঁথিয়া সংবাদদাতা
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার জোড়গাছায় পুলিশের অভিযান চলাকালে গণপিটুনীতে দুইজনের মৃতু্য হয়েছে। পুলিশের দাবি, নিহতরা তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত এবং ডাকাত ও নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থি সংগঠন 'সর্বহারা' দলের সক্রিয় সদস্য। শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এই গণপিটুনীতে নিহত ব্যক্তিরা হলেন; উপজেলার জোড়গাছা গ্রামের শাহীন ওরফে হলকা শাহীন (৪৫) এবং অজ্ঞাত ঠিকানার মাছির উদ্দিন (৩৫)। পুলিশ জানায়, শাহীনের বিরুদ্ধে থানায় দুটি হত্যা মামলাসহ অন্তত ছয়টি মামলা রয়েছে। মাছিরের ঠিকানা জানা যায়নি। তাই তার বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ও অপরাধ সম্পর্কে পুলিশ জানতে পারেনি। পুলিশ ও স্থানীয়ভাবে জানা যায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ জানতে পারে, জোড়গাছা গ্রামে পুলিশের তালিকাভুক্ত কয়েকজন সন্ত্রাসী অবস্থান করছে। পুলিশের একটি দল সন্ত্রাসীদের ধরতে ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় সন্ত্রাসীদের ধরতে এলাকাবাসীও পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয়। শত শত এলাকাবাসী এ সময় মাছির উদ্দিনকে ধরে গণপিটুনি দেয়। মাছিরের সঙ্গে থাকা তিন-চারজন \হকচুরিপনায় ভরা সেচখালে ঝাঁপ দেয়। সেখান থেকে এলাকাবাসী শাহীনকে ধরে গণপিটুনি দেয়। বাকিরা পালিয়ে যায়। এ সময় এলাকাবাসী ঘটনাস্থল থেকে একটি শাটারগান উদ্ধার করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পুলিশ জানায়, গণপিটুনীর শিকার মাছির ও শাহীনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাদের অ্যাম্বুলেন্সে করে পাবনা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। বেড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জিলস্নুর রহমান জানান, গণপিটুনিতে দুজনের মৃতু্য হয়েছে। নিহতরা পেশায় ডাকাত ও নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থি সর্বহারা দলের সক্রিয় সদস্য। তিনি বলেন, শাহীন পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তাকে পুলিশ দীর্ঘদিন ধরেই খুঁজছিল। পুলিশের দাবি, শাহীনের সঙ্গে থাকা মাছিরও সন্ত্রাসী এমন ধারণা করা হচ্ছে। তবে তার ঠিকানা এখনো পাইনি। তাই তার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। এদিকে সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, উপজেলার ছোন্দহ ক্যানেলপাড়ার সিদ্দিকের বাড়িতে ৪/৫ জনের একদল ডাকাত ডাকাতির উদ্দেশ্যে হানা দেয়। এ সময় বাড়ির লোকজনের চিৎকারে এলাকাবাসী জড়ো হয়। তাদের ধাওয়া করে গণপিটুনী দেয়। ওসি বলেন, ওই এলাকায় আসামি ধরতে পুলিশের অভিযান চলছিল। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে এলাকাবাসীর হাত থেকে গণপিটুনীর শিকার দুইজনকে উদ্ধার করে। ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এলাকাবাসীর সহায়তায় আমরা সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে একটি শাটারগান পেয়েছি। তবে ধারণা করছি, তাদের কাছে আরও কয়েকটি অস্ত্র ছিল। সেচখালে ঝাঁপ দেয়ার সময় তারা হয়তো সেগুলো ফেলে দিয়েছে। নিহতদের লাশের ময়নাতদন্ত পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।