গোলাগুলিতে ২ রোহিঙ্গা মাদক পাচারকারী নিহত

ময়মনসিংহে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত ১

প্রকাশ | ২৩ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
কক্সবাজারের টেকনাফে বিজিবির সঙ্গে মাদক পাচারকারীদের গোলাগুলিতে দুই রোহিঙ্গা ও ময়মনসিংহে অটোচালক হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন নিহত হয়েছেন। ঘটনায় আহত হন দুই বিজিবি সদস্য। কক্সবাজারের নিহত দুই রোহিঙ্গা ইয়াবা পাচারকারী ছিলেন বলে জানায় বিজিবি। বৃহস্পতিবার ভোররাতে উপজেলার উলুবনিয়ার গ্রামের পূর্ব পাশে নাফ নদী তীরসংলগ্ন কাঁটাখাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। টেকনাফ-২ বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার তথ্যটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে ৫০ হাজার ইয়াবা, দেশীয় একটি বন্দুক, তিনটি তাজা কার্তুজ, দুটি ধারালো কিরিচ উদ্ধার করা হয়। এ সময় একটি নৌকা জব্দ করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন হ্নীলার মোছনি রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের বাসিন্দা নুর আলম (৩০) ও উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের বাসিন্দা মোহাম্মদ সাকের (২২)। এ সময় বিজিবির দুই সদস্য সিপাহি মো. উজ্জ্বল হোসেন ও মো. মতিয়ার রহমান আহত হয়েছেন। টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান বলেন, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নাফ মাদক পাচারকারী নিহত নদীসংলগ্ন কাঁটাখাল এলাকা দিয়ে ইয়াবার বড় চালান মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে এমন তথ্যের ভিত্তিতে হোয়াইক্যং বর্ডার অবজারভেশন পোস্টের (বিওপি) বিশেষ টহল দল ওই এলাকায় অবস্থান নেয়। কিছুক্ষণ পরে কয়েকজন ইয়াবা পাচারকারী নাফ নদী পার হওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বিজিবি টহল দলের উপস্থিতি টের পেয়ে ইয়াবা পাচারকারীরা অতর্কিতে গুলি ছোড়ে। এতে বিজিবির দুই সদস্য আহত হন। আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি চালায়। দুই পক্ষে তিন থেকে চার মিনিট গোলাগুলি চলে। পরে টহল দল ঘটনাস্থল তলস্নাশি করে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। তাদের টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নেয়া হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সেখান থেকে আহত ব্যক্তিদের কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করার পরামর্শ দেন। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। মৃতদেহ দুটি কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক টিটু চন্দ্র শীল বলেন, বৃহস্পতিবার ভোররাতে বিজিবি চারজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের শরীরে তিনটি করে গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। আহত দুই বিজিবি সদস্যকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সকালে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অধিনায়ক ফয়সল হাসান খান জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। গত বছর ৪ মে থেকে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু হয়। এখন পর্যন্তর্ যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্(যাব), পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) বন্দুকযুদ্ধ ও মাদকে প্রভাব বিস্তারসহ বিভিন্ন ঘটনায় কক্সবাজার জেলায় দুজন নারীসহ ১৪৯ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে এক নারীসহ ২৯ জন রোহিঙ্গা। এদিকে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে এক অটোচালককে হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। বুধবার রাত দেড়টার দিকে গফরগাঁও উপজেলার পাগলা চাকুয়া এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে বলে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি শাহ কামাল হোসেন আকন্দের ভাষ্য। পুলিশ বলছে, নিহত এখলাছ উদ্দিন (৩৫) একটি 'আন্তঃজেলা ডাকাত দলের' সর্দার। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি ও মাদকের কারবারসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ছয়টি মামলা রয়েছে থানায়। গত ২৭ জুলাই রাতে সুজন নামের এক অটোচালককে জবাই করে তার অটোরিকশা ছিনতাই করে একদল ছিনতাইকারী। এখলাছ ওই হত্যাকান্ডের প্রধান সন্দেহভাজন ছিলেন বলে জানিয়েছেন ডিবির ওসি শাহ কামাল। তিনি বলেন, এখলাছসহ বেশ কয়েকজন 'মাদক ব্যবসায়ী' চাকুয়া এলাকায় অবস্থান করছে খবর পেয়ে ডিবি পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযানে যায়। 'পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে এখলাছ গুলিবিদ্ধ হয়। অন্যরা তখন পালিয়ে যায়।' এখলাছকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ওসি। তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।