আইভী রহমানের শাহাদতবার্ষিকী আজ

প্রকাশ | ২৪ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

বিশেষ সংবাদদাতা
আইভী রহমান
আজ ২৪ আগস্ট নারীর ক্ষমতায়ন ও বাংলাদেশে নারী আন্দোলনের অন্যতম সংগ্রামী, মানবতাবাদী আইভী রহমানের ১৫তম শাহাদতবার্ষিকী। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শান্তির সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় তিনি গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তিন দিন পরে ২৪ আগস্ট রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চিরবিদায় নেন এই মহীয়সী নারী। বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য আইভী রহমান ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন সেই ছাত্রজীবনেই। ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত মহিলা আওয়ামী লীগের প্রথম কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন তিনি। ভারতে গিয়ে বাংলাদেশের পৃষ্ঠা ১৫ কলাম ৬ আইভী রহমানের শাহাদতবার্ষিকী যে ক'জন নারী প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছেন আইভী রহমান তাদের একজন। জীবদ্দশায় তিনি মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৮ সালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা নির্বাচিত হন। আমৃতু্য তিনি ওই পদে ছিলেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিলস্নুর রহমানের সহধর্মিণী আইভী রহমান রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে সক্রিয় ছিলেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সভানেত্রী ও জাতীয় অন্ধকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। নারী অধিকার সুরক্ষায়, প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ও সমাজের অবহেলিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় তিনি আপসহীন ভূমিকা রেখেছেন সারাজীবন। ১৯৪৪ সালের ৭ জুলাই বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবের চন্ডিবেড় গ্রামে আইভী রহমান জন্মগ্রহণ করেন। বাবা প্রয়াত জালাল উদ্দিন আহমেদ ছিলেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ। মা হাসিনা বেগম ছিলেন আদর্শ গৃহিণী। আট বোন ও চার ভাইয়ের মধ্যে আইভী ছিলেন পঞ্চম। তার পুরো নাম জেবুন্নাহার আইভী। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় ১৯৫৮ সালের ২৭ জুন তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা জিলস্নুর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এই দম্পতির একমাত্র ছেলে সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি। দুই মেয়ে তানিয়া বখত ও ময়না। আইভী রহমান আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যেমন ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন, তেমনি বঙ্গবন্ধু পরিবারের সঙ্গেও তার আত্মীয়তা রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানার খালাশাশুড়ি ছিলেন তিনি। কর্মসূচি: আইভী রহমানের মৃতু্যবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে ঢাকা ও ভৈরবে বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং পরিবারের সদস্যরা শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের মাধ্যমে তাকে স্মরণ করবে। বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে কোরআন খতম, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন রয়েছে বিভিন্ন স্থানে। সকাল সাড়ে ৮টায় বনানী কবরস্থানে আইভী রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করবে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। এরপর বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবে এই মহীয়সী নারীর সমাধিতে। বিকালে রাজধানীতে দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে ভৈরবে সকাল ৭টায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। এ সময় দলের স্থানীয় নেতা-কর্মী-সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীরা কালো ব্যাজ ধারণ করবেন। সকাল সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে কোরআন খতম। একই সময়ে তার নিজ বাড়ি শহরের ভৈরবপুর এলাকার আইভী ভবন ও বাবার বাড়ি চন্ডিবেড়ের জালাল কটেজে অনুষ্ঠিত হবে কোরআনখানি ও মিলাদ মাহফিল। রয়েছে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন ও স্মরণসভা।