যে কোনোভাবে বোরো সংগ্রহে লক্ষ্য অর্জন করতে চায় সরকার

চলতি বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ১০ লাখ টন সিদ্ধ চাল, দেড় লাখ টন আতপ চাল এবং চার লাখ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করা হয়, প্রতিকেজি সিদ্ধ চাল ৩৬ ও আতপ চাল ৩৫ টাকা ও ধান ২৬ টাকা

প্রকাশ | ২৬ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ক্ষেতে ধান কাটছেন কৃষকরা
এবার যে কোনোভাবে বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চায় সরকার। এজন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বারবার তাগিদপত্র দিচ্ছে খাদ্য অধিদপ্তর। সরকারি ক্ষেত্রে সাধারণত কোনো বছরই কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয় না। কৃষক ধানে ন্যায্যমূল্য বঞ্চিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে এবার পরিমাণ বাড়িয়ে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে তা অর্জনে জোর দিয়েছে সরকার। খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটি দুই দফা সভা করে চলতি বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ১০ লাখ টন সিদ্ধ চাল, দেড় লাখ টন আতপ চাল এবং চার লাখ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করা হয়, প্রতিকেজি সিদ্ধ চাল ৩৬ ও আতপ চাল ৩৫ টাকা ও ধান ২৬ টাকা। গত ২৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে এ ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান চলবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। ধান সংগ্রহ কার্যক্রম জোরদার করার জন্য কয়েক দফা তাগিদ দিয়ে খাদ্য অধিদপ্তর থেকে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সর্বশেষ গত ২১ আগস্ট রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশালের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে তাগিদপত্র দিয়েছেন খাদ্য অধিদপ্তর মহাপরিচালক মোসাম্মৎ নাজমানারা খানুম। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, 'চলতি অভ্যন্তরীণ বোরো সংগ্রহ-২০১৯ এর মেয়াদ আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত নির্ধারিত রয়েছে। চলতি অর্থবছরে বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ টন নির্ধারিত আছে। গত ১৯ আগস্ট পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সারা দেশে ২ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯১ টন ধান সংগৃহীত হয়েছে। রাজশাহী বিভাগের ৭০ হাজার ৯৭১ টনের বিপরীতে ৫৩ হাজার ৯৫৮ টন, রংপুরে ৬২ হাজার ৪৯১ টনের বিপরীতে ৪৮ হাজার ৫০৩ টন, ঢাকা বিভাগে ১ লাখ ১৭ হাজার ৬৬৪ টনের বিপরীতে ৮৫ হাজার ৩৯০ টন ধান সংগৃহীত হয়েছে। এ ছাড়া খুলনায় ৫১ হাজার ২৫৮ টনের স্থলে ৪০ হাজার ৫৫১ টন, চট্টগ্রামে ৪৭ হাজার ৪২৪ টনের ক্ষেত্রে ৩৯ হাজার ২৮৯ টন, সিলেটে ৩৬ হাজার ৮০৭ টনের স্থলে ২২ হাজার ৯০২ টন, বরিশালে ১৩ হাজার ৩৮৫ টন লক্ষ্যমাত্রার স্থলে ৯ হাজার ৩৮৯ টন বোরো ধান সংগ্রহ করা হয়েছে বলে চিঠিতে উলেস্নখ করা হয়েছে। চিঠিতে আরও বলা হয়, ধান সংগ্রহের গতি বাড়াতে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। ২ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯১ টন ধান সংগৃহীত হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সারা দেশে এখনও এক লাখ ৯ টন ধান সংগ্রহের অপেক্ষায় রয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সংগ্রহের অবশিষ্ট এক লাখ ৯ টন ধান সংগ্রহের নির্ধারিত মেয়াদ ৩১ আগস্টের মধ্যে সংগ্রহ নিশ্চিত করতে হবে। যদি নিজ নিজ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত জেলার উপজেলা বা এলএসডিতে (খাদ্যগুদাম) নির্ধারিত ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা সংগ্রহের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে অর্জনের সম্ভাবনা না থাকে, তাহলে ওই পরিমাণ ধান 'অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহ নীতিমালা, ২০১৭' এর ৮ (খ) অনুচ্ছেদের আলোকে সংশ্লিষ্ট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের আন্তঃউপজেলা সমন্বয়ের মাধ্যমে ধানের লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ অর্জন নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয় চিঠিতে। 'অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহ নীতিমালা, ২০১৭' এর ৮ (খ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, 'কোনো উপজেলায় সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সম্ভাবনা না থাকলে সংশ্লিষ্ট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, জেলা সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটির সভাপতিকে অবহিত রেখে অন্যান্য উপজেলার ক্রয় কেন্দ্রে লক্ষ্যমাত্রা সমন্বয় করবেন। আবার জেলায় যে পরিমাণ ক্রয়ের সম্ভাবনা নেই অথবা আরও যে পরিমাণ ক্রয়ের সম্ভাবনা রয়েছে তা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, জেলা সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটির সভাপতিকে অবহিত করে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের নিকট সমর্পণ বা চাহিদা প্রদান করবেন। 'আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকরা নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে আন্তঃজেলা লক্ষ্যমাত্রা সমন্বয় করবেন। এরূপ পরিবর্তন বা সমন্বয় সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রককে এবং সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক খাদ্য অধিদপ্তরকে অবহিত করবেন। আন্তঃবিভাগ লক্ষ্যমাত্রা সমন্বয়ের প্রয়োজন হলে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের প্রস্তাব বিবেচনা করে খাদ্য অধিদপ্তর সমন্বয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং সকল স্তরের সমন্বয়ের বিষয় খাদ্য অধিদপ্তর মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবে।'