খালেদা জিয়াকে 'সুস্থ' দেখিয়ে জেলে নেয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে

দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে ফখরুল

প্রকাশ | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম রোববার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন -যাযাদি
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে এবং প্রচন্ড অসুস্থ জানিয়ে তার মুক্তির দাবিতে বিএনপি দুইদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর মানববন্ধন করবে দলটি। রোববার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কর্মসূচির ঘোষণা দেন। তার অভিযোগ, খালেদা জিয়াকে 'সুস্থ' দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। খালেদা জিয়া গত এপ্রিল মাস থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। মির্জা ফখরুল বলেন, 'মিথ্যা মামলা দিয়ে খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রেখে ধীরে ধীরে মৃতু্যর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। রাজনীতির প্রতিপক্ষকে নিশ্চিহ্ন করতেই এটা করা হচ্ছে। খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার বিকল্পব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটা কখনোই মেনে নেয়া যায় না। তার মুক্তি দাবি করছি। এই দাবির পক্ষে ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় মানববন্ধন ও ১২ সেপ্টেম্বর সারাদেশে মানববন্ধন পালিত হবে।' আইনগতভাবে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, তার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে সে দায় সরকারের। পবিত্র ঈদুল আজহার আগে বিএনপি বিভাগীয় শহরগুলোয় সমাবেশ শুরু করেছিল, সেই সমাবেশগুলো আবার হবে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ২৬ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ, ২৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহী এবং ২১ তারিখে সিলেটে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরবর্তী সময় রংপুরেও হবে। তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাবে যতটুকু জায়গা তারা পাচ্ছেন, সেটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সেটা খালেদা জিয়ার নিজের ব্যাপার। তিনি এখন পর্যন্ত প্যারোল চাননি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'খালেদা জিয়া পাঁচ মাস ধরে বিএসএমএমইউয়ে ভর্তি রয়েছেন। তার স্বাস্থ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তিনি প্রচন্ড অসুস্থ। তার স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে। তার পছন্দের হাসপাতালে সরকার চিকিৎসা নিতে দিচ্ছে না।' বিএসএমএমইউয়ের পরিচালক ও \হউপাচার্য জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া সুস্থ। তাদের এই বক্তব্য খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর জন্য ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার পরিবার দেখে এসেছে, তিনি হাঁটতে পারেন না, একা চলতে পারেন না। মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারদলীয় নেতা ও মন্ত্রীরা কারাবন্দি থাকা অবস্থায় বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। খালেদা জিয়ার মতো মামলায় সরকারের অনেক মন্ত্রী জামিনে রয়েছেন বলে জানান ফখরুল। রাজনৈতিক কারণে খালেদাকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, খালেদার জামিনে পদে পদে বাধা। স্বাস্থ্যগত কারণে আবার তারা জামিনের চেষ্টা করবেন। কিন্তু মূল বিষয় রাজনীতি বলে জানান। তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর সব সরকারের একটা মানবিক দিক থাকে। এই সরকারের কোনো মানবিক দিক নেই। যার কারণে খালেদার স্বাস্থ্যের এই অবস্থা। খালেদা জিয়াকে চিকিৎসাহীন রাখা হচ্ছে দাবি করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদার বস্নাড সুগার ১৪-তে উঠে গেছে। এটাকে বিএসএমএমইউয়ের চিকিৎসকরা বলছেন স্বাভাবিক। তিনি হাঁটতে পারেন না। বাঁ হাতে কিছু ধরতে পারেন না। কিন্তু তারা বলছেন, সুস্থ আছেন। চিকিৎসকরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।