টাকা না পেয়ে হাসিকে খুন করে সাবেক স্বামী সোহেল

প্রকাশ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সোহেল রানা
যাযাদি ডেস্ক চার মাস আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় হাসি আক্তার ও সোহেল রানার। কিন্তু দুই মাস না যেতেই পরিবারে নেমে আসে অশান্তি-কলহ। চার মাসের মাথায় বিচ্ছেদ ঘটে তাদের। বিচ্ছেদের পরও হাসির কাছে টাকা দাবি ও নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতে থাকে সোহেল। টাকা না দেয়ায় একপর্যায়ে গত ১ মে সাভারের ভাড়াবাসায় ঢুকে হাসি আক্তারকে পিটিয়ে ও গুরুতর জখম করে নগদ টাকাসহ প্রায় দেড় লাখ টাকার সমমূল্যের জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যায় সোহেল। ওই সময় বাড়ির মালিক গুরুতর জখম ও অজ্ঞান হাসি আক্তারকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালের নিউরোলজি সায়েন্সের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে ছয়দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৭ মে মারা যান হাসি। ওই ঘটনায় হাসির মা বাদী হয়ে সাভার থানায় মামলা দায়ের করেন। থানায় মামলা হওয়ার পরও আসামি সোহেল ও তার পরিবার মামলা তুলে নিতে বাদীকে খুন-জখমের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। মামলার গুরুত্ব বিবেচনা করে পুলিশের পাশাপাশির্ যাব-৪ মামলাটির ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন, পারিপার্শ্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। র?্যাব-৪ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, আসামি মো. সোহেল রানা (২৫) পাঁচ মাস ধরে কুমিলস্না শহরে আত্মগোপনে আছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে কুমিলস্না শহরের ধর্মসাগর পার্কের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারর্ যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানর্ যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, পারিবারিক সম্মতিতেই তাদের বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু পারিবারিক কলহের জেরে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর হাসি আক্তার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। বেঁচে থাকার তাগিদে এনজিওতে চাকরি নেন এবং সাভার আমিনবাজার শিবপুরে ভাড়া বাসায় ওঠেন। অফিসে যাওয়া-আসার পথে ও ভাড়াবাসায় গিয়ে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করাসহ হাসি আক্তারের কাছ থেকে টাকা দাবি করে সাবেক স্বামী সোহেল। নিষেধ করলে আরও বেশি উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। কোনো টাকা সোহেলকে দেবে না বলে হাসি জানালে সোহেল ক্ষিপ্ত হয় ও হত্যার হুমকি দেয়। তাতেও কাজ না হওয়ায় গত ১ মে সকালে হাসির ভাড়াবাসায় জোরপূর্বক প্রবেশ করে। টাকা না পেয়ে হাসি আক্তারকে এলোপাতাড়ি চড়, থাপ্পড়, কিল ও ঘুষি মারতে থাকে। চোখে এবং মাথার এক পাশে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে একপর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে যায় হাসি। তাতেও থামেনি সোহেল। চুল ধরে মেঝেতে উপর্যুপরি মাথায় আঘাত করতে থাকে। খাটের নিচে থাকা ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে মারাত্মক জখম করে। রক্তে মেঝে ভিজে যায়। রক্তাক্ত নিথর দেহ রেখেই আলমারি থেকে তিন ভরি স্বর্ণ ও নগদ ৩০ হাজার টাকাসহ দেড় লাখ টাকার মালামাল নিয়ে দরজা বন্ধ করে পালিয়ে যায়।