জাবিতে আন্দোলনকারীদের ধর্মঘট উপাচার্যপন্থিদের মানববন্ধন

প্রকাশ | ০৩ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০৫

যাযাদি ডেস্ক
জাবি ক্যাম্পাসে বুধবার উপাচার্য ড. ফারজানা ইসলামের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা -যাযাদি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য ফারজানা ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ধর্মঘট চলছে। এদিকে 'ষড়যন্ত্র' করে উপাচার্যের বিরুদ্ধে 'মিথ্যা অভিযোগ' তোলা হয়েছে- এমন দাবি তুলে মানববন্ধন করেছেন উপাচার্যপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ। বুধবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ও পুরানো প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রাখেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিকাল ৪টা পর্যন্ত এই অবরোধ কর্মসূচি চলে। এদিকে অবরোধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেননি। তাদের ভবনের বাইরে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। কার্যালয়ে আসেননি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। সর্বাত্মক ধর্মঘটের কারণে ক্লাস-পরীক্ষা নেয়া থেকে বিরত ছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে অচলাবস্থা দেয়। তবে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের চূড়ান্ত পরীক্ষা ধর্মঘটের আওতামুক্ত ছিল। ধর্মঘটের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশমাইল এলাকায় পরিবহণ ডিপো অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। ফলে ক্যাম্পাস থেকে রাজধানীসহ বিভিন্ন রুটে কোনো গাড়ি ছেড়ে যেতে পারেনি। আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, উপাচার্য স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করায় তাদের এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন, 'আমরা উপাচার্যকে ১ অক্টোবরের মধ্যে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের সুযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি তা করেননি। এখন আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে অপসারণ করব। এরপর আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়া হবে।' উপাচার্যপন্থীদের মানববন্ধন এদিকে বেলা ১১টার দিকে 'ষড়যন্ত্র করে আন্দোলনে ইন্ধন' দেয়ার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবীর ও সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আমির হোসেনের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন উপাচার্যপন্থী শিক্ষকেরা। 'বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ'-এর ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন চলাকালে পরিষদের সভাপতি আবদুল মান্নান চৌধুরী বলেন, 'উপাচার্য আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে তাদের তিনটি দাবির দুইটি মেনে নিয়েছেন। আর তৃতীয় দাবি নিয়ে পরবর্তীতে আলোচনায় বসলে তারা বিচার বিভাগীয় তদন্তের দিকে না গিয়ে অভিযোগ ছাড়াই উপাচার্যের পদত্যাগ চাইলেন। এতে স্পষ্ট হয়ে গেছে, এখানে কোনো ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমরা অন্যায়ের কাছে মাথা নত করব না। এসব অন্যায়কে রুখে দেয়া হবে।' বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার জন্য বারবার একটি গোষ্ঠী চক্রান্ত করছে। উপাচার্য ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর দুর্নীতির অবিশ্বাস্য অভিযোগ তুলে উন্নয়নকাজকে বন্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতি থেকে আলোচনার মাধ্যমেই বের হয়ে আসতে হবে।' মানববন্ধনে পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক নঈম সুলতান, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এটিএম আতিকুর রহমান, সুলতানা আক্তার, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. সালাহউদ্দিন, ওবায়দুর রহমান, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি শেখ আদনান ফাহাদ, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি মাহফুজা খাতুন, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক জাহিদুল করিম প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করা হবে বলেও ঘোষণা করা হয়।