ছাত্রলীগের কিছু কাজে আ'লীগ বিব্রত: হানিফ

প্রকাশ | ০৯ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি ডেস্ক বুয়েট নামে পরিচিত বাংলাদেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় যে কয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের বেশিরভাই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা। ক্ষমতাসীন দলের যুব এবং ছাত্রসংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যাপক চাঁদাবাজি, দুর্নীতি এবং অবৈধ ব্যবসা-বাণিজ্যের অভিযোগ নিয়ে যখন বাংলাদেশে ব্যাপক আলোচনা চলছে, এর মধ্যে এই সর্বশেষ ঘটনা আওয়ামী লীগের জন্য কতটা বিব্রতকর? আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলছেন, 'বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ ও তরুণ সমাজের মধ্যে অস্থিরতার মাত্রাটা অনেক বেশি। সেই অস্থিরতার বহিঃপ্রকাশই এ রকম মাঝে মাঝে দেখা যায়। এখন এটাও ভাববার সময় এসেছে যে, বাংলাদেশে এ ধরনের রাজনীতি কী আর সমর্থনযোগ্য কিনা।' তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির কথা বলছেন কিনা? জবাবে তিনি বলেন, 'ছাত্র রাজনীতিতে যদি উৎকর্ষতা না আসে, যে ছাত্ররা রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত তারা যদি শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ ভালো বজায় রাখতে না পারে বা তারা যদি ছাত্রদের কল্যাণে কাজ করতে না পারে, তাদের সম্পর্কে মানুষের একটা নেতিবাচক ধারণা চলে আসবে।' দলের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি আবরার ফাহাদ নামের বুয়েটের ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ ও ধিক্কার উঠেছে বাংলাদেশে। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ নতুন নয়। প্রকাশ্যে রাস্তায় কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। যার জন্য তাদের কয়েকজনের সাজাও হয়েছে। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, নিজেদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষের জেরে সংঘর্ষের বহু ঘটনা রয়েছে। মাত্র কয়েকদিন আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা চাঁদা চেয়েছেন- এমন অভিযোগে কেন্দ্রীয় নেতাদের কয়েকজনকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। ছাত্রলীগের ভেতর এমন নেতাকর্মী দেখা যাচ্ছে, যাদের অনেকেই নিজেদের আইনকানুনের ঊর্ধ্বে বলে মনে করেন। এ রকম একটি পরিস্থিতি আওয়ামী লীগের মতো দলের সহযোগী সংগঠনে কিভাবে তৈরি হলো, সেই প্রশ্ন উঠেছে। এই সংগঠনের যে ভাবমূর্তি এখন তৈরি হয়েছে, সেটি কি আওয়ামী লীগের রাজনীতির বড় ক্ষতি করছে? হানিফ বলেন, 'ছাত্রলীগ বাংলাদেশের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী একটা সংগঠন হিসেবে ছিল। এই ছাত্রলীগের অনেক গৌরবোজ্জ্বল অতীত আছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এই ছাত্রলীগের একটা উজ্জ্বল অবস্থান ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে ছাত্রলীগের কিছু কিছু কর্মকান্ড ছাত্রলীগকেই শুধু বিতর্কিত করছে না, এটা মূল সংগঠন আওয়ামী লীগকেও অনেক বিব্রতকর অবস্থায় ফেলছে। এটি নিয়ে অবশ্যই আমাদের বিব্রত হতে হয়।' এই পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দেবে আওয়ামী লীগ? মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, পৃথিবীর যেকোনো দেশেই অপরাধকে দমন করার জন্য আইনের কঠোর প্রক্রিয়াকেই সবসময় অনুসরণ করা হয়। অবশ্যই এখানে আইনের কঠোর প্রক্রিয়া হবে। তবে তিনি বলছেন, 'যারা উগ্র মানসিকতাসম্পন্ন, তাদের সরিয়ে দেয়া বা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া। এই পদ্ধতিতে আমরা আশা করছি, ভবিষ্যতে আমরা এ ধরনের বিব্রতকর অবস্থা থেকে হয়ত বের হয়ে আসতে পারব।' দল থেকে অনুপ্রবেশকারীদের সরিয়ে দেয়ার কথা উলেস্নখ করে তিনি বলেন, 'বিশেষ করে আমাদের টানা ১১ বছর ক্ষমতায় থাকার কারণে অনেক অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে। যারা বেশিরভাগই সুযোগ-সুবিধা নেয়ার জন্যই আসে। দল থেকে এই অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা করে, তাদের চিহ্নিত করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।' বিবিসি বাংলা