যুবলীগের 'বয়সসীমা' নির্ধারণে ভাবনা

প্রকাশ | ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
স্বাধীনতা-উত্তরকালে যুবদের রাজনৈতিক শিক্ষায় সচেতন করার লক্ষ্যে স্বাধীনতা আন্দোলন ও সশস্ত্র সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি প্রতিষ্ঠা করেন যুবলীগ। ১৯৭৪ সালে প্রথম যখন জাতীয় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয় তখন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ৩৩ বছর বয়সি শেখ ফজলুল হক মণি। সংগঠনটির গঠনতন্ত্রে বয়সসীমা ৪০ বছর থাকলেও ১৯৭৮ সালের দ্বিতীয় কংগ্রেসের পর বিধানটি বিলুপ্ত করা হয়। দীর্ঘদিন যুবলীগের নেতৃত্বের বয়স নিয়ে সমালোচনা চলায় সংগঠনটির ভেতরে ও বাইরে বয়সসীমা নির্ধারণ নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বলছে, একজন যুবক বা যুব মহিলাকে উচ্চ মাধ্যমিক ও তদূর্ধ্ব শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন হতে হবে এবং তার বয়স হতে হবে ২৪ থেকে ৩৫ বছর। যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে, সংগঠনটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ছয়টি জাতীয় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ফজলুল হক মণি ছাড়া আর কারও বয়সই চলিস্নশের নিচে ছিল না। যুবলীগের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৭৪ সালের প্রথম জাতীয় কংগ্রেসে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, বঙ্গবন্ধুর ভাগনে শেখ ফজলুল হক মণি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মাত্র ৩৩ বছর বয়সে। ওই সময় যুবলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৪০ বছরের একটি বয়সসীমার বিধান ছিল। তবে ১৯৭৮ সালে অনুষ্ঠিত সংগঠনটির দ্বিতীয় জাতীয় কংগ্রেসে ওই বিধানটি বিলুপ্ত করা হয়। ওই কংগ্রেসে ৩৮ বছর বয়সি আমীর হোসেন আমু চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। যুবলীগ সূত্রে আরও জানা যায়, ১৯৮৬ সালের তৃতীয় কংগ্রেসে ৩৭ বছর বয়সে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মোস্তফা মহসীন মন্টু। ১৯৯৬ সালের চতুর্থ জাতীয় কংগ্রেসে ৪৭ বছর বয়সে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন শেখ ফজলুল করিম সেলিম। ২০০৩ সালের পঞ্চম জাতীয় কংগ্রেসে ৪৯ বছর বয়সে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জাহাঙ্গীর কবির নানক। এ কমিটি ২০০৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে। ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত হয় সংগঠনটির ষষ্ঠ জাতীয় কংগ্রেস। এ কংগ্রেসে ৬৪ বছর বয়সে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী। সংগঠনটির নেতাদের কাছ থেকে জানা যায়, যুবলীগের চেয়ারম্যান, সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসিডিয়াম সদস্যদের বেশির ভাগই ষাটোর্ধ্ব। প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মধ্যে মাত্র পাঁচজনের বয়স ৬০ বছরের নিচে। বাকি ২০ জনের বয়সই ষাটের বেশি। পঞ্চম যুগ্ম সম্পাদকের প্রত্যেকের বয়সই ৫৫ বছরের অধিক। আট সাংগঠনিক সম্পাদকের মধ্যে শুধু একজনের বয়স ৫০-এর কম। বাকি সাতজনের বয়সই পঞ্চাশোর্ধ্ব। সম্পাদকমন্ডলীর ৬০ জনের মধ্যে ৪৫ জনই পঞ্চাশোর্ধ্ব। সহ-সম্পাদক ২০ জনের মধ্যে ১৫ জনেরই বয়স ৫০-এর বেশি। সদস্য ২৬ জনের মধ্যে ১৫ জন ৫০ পার করেছেন। এ ব্যাপারে যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, যুবলীগ করার একটা বয়স নির্ধারণ করে দেয়া উচিত। যুবলীগের আগামী সম্মেলনের মাধ্যমে দেশরত্ন শেখ হাসিনা একটি গতিশীল, সঠিক ও সুন্দর নেতৃত্ব উপহার দেবেন। আগামী সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটির নেতৃত্ব নির্বাচনে বয়সের কাঠামো নির্ধারণের চিন্তাভাবনা আমরা করছি। এ বিষয়ে নেত্রীর কাছে সুপারিশ করবেন।