বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ

একটি মোবাইল চার্জারের দাম ২২ হাজার টাকা!

২০১৭ সালে ৯২ হাজার ৬৩০ টাকা দিয়ে মোবাইল সেট ও কভার কেনা, কর্মশালায় আপ্যায়নে লাখ টাকা খরচের বিবরণ জমা দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে

প্রকাশ | ১৫ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি রিপোর্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎকেন্দ্র প্রকল্প, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বালিশ আর ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের পর্দা দুর্নীতির মতো এবার একটি মোবাইল চার্জার কেনার দাম দেখানো হয়েছে ২২ হাজার ২৯০ টাকা। বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কর্মকর্তাদের জন্য ২০১৭ সালে কেনা হয় কিছু মোবাইল ফোন, আইপ্যাড, মোবাইলের কভার ও চার্জার। সেই কেনার বিবরণে এমন দাম দেখানো হয়েছে। ওই কেনাকাটার বিবরণ সম্প্রতি সংস্থাটির সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দাখিল করা হয়। আইডিআরএর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির সদস্য সুলতান উল আবেদীন মোলস্নার (বর্তমানে অবসরে) নামে মোবাইল চার্জার কিনতে ২২ হাজার ২৯০ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। আইডিআরএ থেকে এ টাকা দেওয়া হয় চেকের (চেক নম্বর-২২৯২৯৩৪) মাধ্যমে। আইডিআরএর খরচের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আইডিআরএর টাকায় আরেক সদস্য জুবের আহমেদ খানের (বর্তমানে অবসরে) জন্য ৯২ হাজার ৬৩০ টাকা দিয়ে মোবাইল সেট ও কভার কেনা হয়। আরেক সদস্য মো. মুরশিদ আলমের (বর্তমানে অবসরে) জন্য আইডিআরএর টাকা দিয়ে ৮১ হাজার ৯৯৯ টাকা দিয়ে মোবাইল সেট কেনা হয়। বর্তমান সদস্য গকুল চাঁদ দাসের জন্য এক লাখ ৯১ হাজার ৬৫০ টাকায় কেনা হয় আইফোন ও আইপ্যাড। এছাড়া সদস্য সুলতান উল আবেদীন মোলস্নার বিদেশ ভ্রমণ বাবদ দুই দফায় খরচ দেখানো হয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা। এর মধ্যে ২২৯৩০৬১ নম্বর চেকের মাধ্যমে সাবেক এ সদস্যের বিদেশ ভ্রমণের খরচ বাবদ দেওয়া হয় এক লাখ ৭৭ হাজার ৪২০ টাকা। আর ২২৯৩১৪২ নম্বর চেকের মাধ্যমে দেওয়া হয় ১৭ হাজার ৩৯২ টাকা। এ বিষয়ে অবসরে যাওয়া সুলতান উল আবেদীন মোলস্নার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইডিআরএ থেকে কখনো মোবাইলের চার্জার কেনার টাকা নেননি। এছাড়া মোবাইলের চার্জারের দাম কিছুতেই ২২ হাজার টাকা হতে পারে না। এটা অবশ্যই অস্বাভাবিক। তিনি বলেন, 'এখন তো বালিশসহ কত কিছু বেরিয়ে আসছে। এখন খরচের খাতে আমার নাম দেখালে তো আমার কিছু করার নেই। আমি এখন আইডিআরএ নেই। আর আমি থাকা অবস্থাতেও কেউ আমার অগোচরে এটি করলে আমার কিছু করার নেই। আমার জানা মতে, এমন পার্সেস (ক্রয়) আমি করিনি।' সংশ্লিষ্টরাও বলছেন, মোবাইল চার্জারের প্রকৃত দাম কিছুতেই ২২ হাজার টাকা হতে পারে না। এ ধরনের হিসাব অবিশ্বাস্য। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। অবিশ্বাস্য এ খরচ দেখিয়ে টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা উচিত। আইডিআরএর খরচের খাতায় সব ধরনের খরচের অর্থ চেকের মাধ্যমে দেওয়া হলেও কয়েকটি বৈঠক অথবা কর্মশালার আপ্যায়ন খরচ নগদে দেখানো হয়েছে। এসব আপ্যায়নে আইডিআরএর খরচ হয় প্রায় লাখ টাকা। আর প্রতিটি ক্ষেত্রে আপ্যায়নের টাকা দেওয়া হয় ইমদাদুল হক নামে এক কর্মকর্তাকে। সার্বিক বিষয়ে জানতে আইডিআরএর চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারী এবং সদস্য গকুল চাঁদ দাসের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আর সদস্য ড. এম মোশারফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে কথা বলতে চাননি।