ডিএনসিসির ফুডকোর্ট আদৌ কি চালু হবে?

প্রকাশ | ২০ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
লাল ইটের তৈরি অনেকগুলো দোকান, ছোট ছোট ইট আর সিমেন্ট-বালির তৈরি বসার বেঞ্চ-টেবিল। ওপরে খোলা আকাশ। আছে বাঁশঝাড়, হাসনাহেনা, কাঠগোলাপসহ নানা ফুলগাছ। এমন এক পরিবেশে নগরবাসীর জন্য চা-কফিসহ নানা খাবার পরিবেশনের লক্ষ্যে নির্মাণ করা হয়েছিল দৃষ্টিনন্দন বনানী ফুডকোর্ট। ২০১৬ সালের শেষ দিকে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়, শেষ হয় ২০১৮ সালের প্রথম দিকে। কিন্তু এটি এখনো চালু করতে পারেনি ডিএনসিসি। বর্তমানে সেখানে বহুতল গাড়ি পার্কিং ভবন নির্মাণ করা হবে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ-সংলগ্ন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কমিউনিটি সেন্টারঘেঁষে প্রায় এক বিঘা জমির ওপর এটি নির্মাণ করেছিল ডিএনসিসি। খরচ হয়েছিল প্রায় দুই কোটি টাকা। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক এই ফুডকোর্ট করার পরিকল্পনা করেন। যেন সাধারণ মানুষ এমন খোলা আকাশের নিচে বসে চা খেতে খেতে আড্ডা দিতে পারেন। সে অনুযায়ী স্থপতি কাসেফ চৌধুরীর নকশায় ও তত্ত্বাবধানে এটি নির্মাণ করা হয়। চালু না হওয়ায় ফুডকোর্টটি মাদকসেবীদের আড্ডার স্থানে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় দোকানিদের। এমন মনোরম পরিবেশে ডিএনসিসির ফুডকোর্টের বিষয়ে ডিএনসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী ও ফুডকোর্টের প্রকল্প পরিচালক খন্দকার মাহবুব আলম এর আগে বলেছিলেন, ঢাকা শহরে কোথাও বসে আড্ডা দেয়ার মতো জায়গা কম। খোলা জায়গায় বসে মানুষ চা খাবে, গল্প করবে- এমন চিন্তা থেকে ফুডকোর্টটি তৈরি করা হয়েছে। ফুডকোর্টটি কেন চালু হয়নি? জানতে চাইলে পরে তিনি বলেন, ফুডকোর্টটি নির্মাণ শেষে আমরা সম্পত্তি বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে দিয়েছি। বর্তমানে এটির দায়িত্বে রয়েছে সম্পত্তি বিভাগ, রাজস্ব বিভাগ এবং স্থানীয় কাউন্সিলরের। নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে তারা হয়ত বা এখনো চালু করতে পারেনি। এদিকে ডিএনসিসির সংশ্লিষ্ট সূত্রে শোনা যাচ্ছে ভিন্ন কথা। এখন এই ফুডকোর্টটি ভেঙে বহুতল গাড়ি পার্কিং ভবন করার কথা ভাবছে ডিএনসিসি। সূত্র জানায়, বনানী এলাকায় আগত লোকদের গাড়ি পার্ক করার জায়গা নেই। সেখানে বহুতল পার্কিং ভবন করলে তারা গাড়ি রাখার সুবিধা পাবে। ওই এলাকাবাসী গাড়ি পার্কিং নির্মাণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ডিএনসিসির কাছে। নাগরিকদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে সেখানে গাড়ি পার্কিং ভবন করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট একজন বলেন, ঢাকা শহরে এমন মনোরম পরিবেশে বসে চা খাওয়া, আড্ডা দেয়ার মতো কোনো জায়গা নেই। তাই প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক এমন পরিকল্পনা করে এই ফুডকোর্টটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে এটি নির্মাণ শেষে আবার পরিবর্তন করে বহুতল গাড়ি পার্কিং করার উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত হলে তা আসলেই দুঃখজনক বিষয়।