মালিক-চালকের সাজা হঠাৎ বাস বন্ধে বিপাকে চট্টগ্রামবাসী

প্রকাশ | ২২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানোর দায়ে কারাদন্ড দেওয়ার পর সোমবার সকালে চট্টগ্রামে হঠাৎ করে বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধ করে দেন মালিক-শ্রমিকরা। এতে পরিবহণ সংকটে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ -বিডিনিউজ
ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানোয় চালক-মালিককে কারাদন্ড দেওয়ায় হুট করেই চট্টগ্রাম মহানগরীতে মিনিবাস-বাসসহ গণপরিবহণ চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন শ্রমিকরা। পরিবহণ নেতারা বলছেন, সাংগঠনিক কোনো সিদ্ধান্ত না থাকলেও বাস মালিকরা নিজেরাই ভীত হয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন না। কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়া গণপরিবহণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সোমবার সকালে ঘর থেকে বের হয়েই বিপত্তিতে পড়েন নগরবাসী। বিশেষ করে অফিসগামী মানুষ এবং শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েন সবচেয়ে বেশি। সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন সড়কে বাস, মিনিবাস, হিউম্যান হলার চলেনি। তবে অল্পকিছু সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টেম্পো চলতে দেখা গেছে। নিউ মার্কেট, স্টেশন রোড, আন্দরকিলস্না, এনায়েত বাজার, কাজীর দেউরি, টাইগার পাস, আগ্রাবাদ ও জিইসি মোড়ে যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা গেছে বাসের জন্য। সকালে আন্দরকিলস্না মোড়ে ইপিজেডমুখী যাত্রী সাফায়াত ইসলাম বলেন, 'সকালে অফিসে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে কোনো বাস পাননি। অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষায় আছি। আগে থেকে ধর্মঘটের কোনো সংবাদও পাইনি।' ধর্মঘট প্রসঙ্গে মেট্রোপলিটন পরিবহণ মালিক গ্রম্নপের মহাসচিব বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, 'ধর্মঘটের বিষয়ে আমাদের কোনো সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেই। তবে রোববার বিআরটিএ ম্যাজিস্ট্রেট একটি বাস ইউটার্ন করায় তার মালিক, চালাক ও হেলপারকে জরিমানা করেছে।' এজন্য ভীত হয়ে গাড়ির মালিকরা বাস-মিনিবাসসহ অন্যান্য পরিবহণ সকাল থেকে বের করছে না দাবি করে তিনি বলেন, 'আমরাও বিভিন্ন সড়কে শহর এলাকার বাসের ইউটার্নের বিপক্ষে। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট জরিমানার বদলে মালিক, চালক ও হেলপারকে কারাদন্ড দিয়েছেন।' বিষয়টি সমাধানের জন্য তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উলেস্নখ করে তিনি বলেন, সব ধরনের পরিবহণ মালিকই ভয়ে গাড়ি নামাচ্ছেন না। চট্টগ্রাম মহানগরীতে গণপরিবহণ মালিকদের সাতটি সংগঠন রয়েছে। এগুলো হলো- সিটি বাস-মিনিবাস ও হিউম্যান হলার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, মেট্রোপলিটন পরিবহণ মালিক গ্রম্নপ, সিটি বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, চট্টলা পরিবহণ, যাত্রীসেবা পরিবহণ, মহানগর পরিবহণ, কালুরঘাট মিনিবাস মালিক সমিতি ও লুসাই পরিবহণ। তবে সিটি বাস-মিনিবাস ও হিউম্যান হলার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক মিয়া বলেছেন, অঘোষিত এই ধর্মঘটের সাথে তারা নেই। তিনি বলেন, 'অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য একটি পক্ষ এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। পরিবহণ মালিকদের একটি পক্ষ কোনো ঘোষণা ছাড়াই বাস চালাচ্ছেন না।' বিআরটিএ ম্যাজিস্ট্রেট মনজুরুল হক রোববার দুপুরে নগরীর বহদ্দারহাটে একটি শহর এলাকার বাসকে ফিটনেস না থাকায় এবং ১০ নম্বর রুটের বাসটি যথাযথ গন্তব্যে না গিয়ে চান্দগাঁও থানার সামনে ঘুরিয়ে দেওয়ায় বাসের মালিক মনির হোসেনকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেন। এছাড়া বাসটির চালক শামীম উদ্দিন ও হেলপার মোহাম্মদ আলমগীরকে একমাস করে কারাদন্ড দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ বন্দর জোনের উপ-কমিশনার তারেক আহমেদ বলেন, 'রোববার বহদ্দারহাট মোড়ে বিআরটিএর অভিযানে একটি বাসের মালিক ও চালক-সহকারীদের দন্ড দেওয়ায় তারা বাস চালাচ্ছেন না বলে শুনেছি। 'আমরা তাদের অনুরোধ করেছিলাম, ধর্মঘটে না গিয়ে দুই পক্ষের (বিআরটিএ-বাস মালিক) মধ্যে সমঝোতা করে নেয়ার জন্য। কিন্তু তারপরও মালিকরা বাস চালানো থেকে বিরত রয়েছেন।' ট্রাফিক বিভাগের এই কর্মকর্তা বলেন, 'এটি বিআরটিএ ও বাস মালিকদের বিষয়। আমাদের কিছু করার নেই।'