আওয়ামী লীগে আসা সবাই অনুপ্রবেশকারী নন: কাদের

প্রকাশ | ০৯ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
আওয়ামী লীগে যারা অন্য দল থেকে এসেছেন তারা সবাই অনুপ্রবেশকারী নন বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। যাদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আছে এবং যারা বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত, তারাই অনুপ্রবেশকারী বলে জানিয়েছেন তিনি। শুক্রবার আওয়ামী লীগের রাজশাহী জেলা ও মহানগর শাখার নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের মতবিনিময় সভায় তিনি একথা জানান। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, পার্টিতে যারা এসেছেন তারা সবাই অনুপ্রবেশকারী নন। অনেক ক্লিন ইমেজের ভালো লোক তাদের পার্টিতে এসেছেন। যাদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সংশ্লিষ্টতা, মামলা ও দুর্নীতির অভিযোগ নেই, তারা অনুপ্রবেশকারী নন। যাদের সাম্প্রদায়িক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আছে, বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত, তারাই অনুপ্রবেশকারী। তাদের নেত্রী (আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) তাদের দল থেকে বের করে দিতে বলেছেন। আওয়ামী লীগে বিতর্কিত ছাড়া কেউ বাদ পড়ে না। হয়তো এক পদ থেকে আরেক পদে যায়, পদ পরিবর্তন হয়। দল ছাড়ার কারণ নেতিবাচক রাজনীতি এদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতির কারণে জ্যেষ্ঠ নেতারা একে একে দল ছাড়ছেন বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আমার কাছে মনে হয়, এটা বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতির অনিবার্য পরিণতি। আমি এক কথায় এটাই বলব।' তিন দিন আগে বিএনপি ছাড়ার পর দল পরিচালনা পদ্ধতি ও নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনা করেন ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান। মনোনয়ন ও দল পুনর্গঠন নিয়ে ক্ষুব্ধ এই নেতা গত বছর নির্বাচনের পর থেকে একরকম দলবিচ্ছিন্ন হয়ে আছেন। এর আগে দলের দুই জ্যেষ্ঠ নেতা মোসাদ্দেক হোসেন ফালু ও ইনাম আহমেদ চৌধুরী পদত্যাগ করেন। ইনাম আহমেদ আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। সাবেক আমলা ইনাম দুবছর আগে রাজনীতিতে যোগ দিয়ে ২০০১ সালের বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর সর্বশেষ কাউন্সিলে ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছিল তাকে। নিয়মিত দলীয় কার্যক্রমে সক্রিয় না হলেও বিভিন্ন ফোরামে দলের হয়ে কথা বলতেন তিনি। শুক্রবারের বৈঠক নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতীয় সম্মেলন সামনে রেখে করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দেশজুড়ে শাখা সংগঠনের বিভিন্ন জায়গায় মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো পুনর্গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সম্মেলন সামনে রেখে নেতাকর্মীদের মধ্যে 'অসুস্থ প্রতিযোগিতা' বরদাশত করা হবে না বলে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, 'কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করতে হবে। আমাদের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে। কিন্তু সেই প্রতিযোগিতা হবে সুস্থ।' 'অসুস্থ প্রতিযোগিতা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। আমি এখানে নেত্রীর পক্ষ থেকে পরিষ্কারভাবে সবাইকে জানিয়ে দিতে চাই।' ওবায়দুল কাদের বলেন, 'কয়েকদিন আগে আমরা প্রতিনিধি সম্মেলনে গিয়েছিলাম। তারপরও পত্রপত্রিকায় রাজশাহীর খারাপ খবরে ভরে গেল- এটি আমাদের জন্য দুঃখজনক। সম্মেলন সামনে রেখে সকল তিক্ততার অবসান ঘটবে বলে আমি আশা করি।' আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী ও সহদপ্তর সম্পাদক বিপস্নব বড়ুয়া এ সময় সেখানে ছিলেন। এর আগে সমীর চন্দ্র ও উম্মে কুলসুমের নেতৃত্বে কৃষক লীগের নতুন কমিটি দলের শীর্ষ নেতাদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।