সাগর-রুনি হত্যা নিয়ে হাইকোর্ট

রহস্য উদঘাটন না করলের্ যাবের অর্জন ম্স্নান হবে

প্রকাশ | ১৫ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকান্ড নিয়ের্ যাবের তদন্তে হতাশা প্রকাশের পর কাজের সর্বশেষ অবস্থা জানাতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। আগামী বছরের ৪ মার্চের মধ্যে এই প্রতিবেদন দিতে হবের্ যাবকে। একই সঙ্গে আদালত বলেছে, এই হত্যা-রহস্য উদ্ঘাটন ও দোষীদের চিহ্নিত করতে না পারলের্ যাবের অর্জন ম্স্নান হবে। আলোচিত এই মামলায় নিম্ন আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের্ যাবের ৬৯তম বারের মতো ব্যর্থতার দিন বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালতের এই আদেশ এলো। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়। একই সঙ্গে নিজের ক্ষেত্রে মামলা বাতিল চেয়ে আবেদনকারী আসামি মো. তানভীর রহমানের সম্পৃক্ততার বিষয়েও প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে। ৪ মার্চ এই প্রতিবেদনও দিতে হবে। ওই দিনই এই মামলা নিয়ে পরবর্তী আদেশ দেবে হাইকোর্ট। মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি ২০১২ সালের ১১ ফেব্রম্নয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে তাদের ভাড়া বাসায় খুন হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। থানা পুলিশ ও ডিবির হাত ঘুরে ঘটনার দুই মাস পরর্ যাব তদন্তের দায়িত্ব পায়। এরপর দফায় দফায় সময় নিলেও এখনও প্রতিবেদন দিতে পারেনি তারা, ফলে শুরু করা যায়নি বিচার। এর মধ্যে তানভীর উচ্চ আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা বাতিলে আবেদন করলে তার শুনানিতের্ যাবের তদন্ত নিয়ে গত সোমবার হতাশা প্রকাশ করেছিলেন বিচারকরা। বৃহস্পতিবারের আদেশে আদালত তানভীরকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত নিম্ন আদালতে হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। আদালত বলেছে, দেশের সকল স্তরের মানুষের দৃঢ় প্রত্যাশা ছিল দ্রম্নততম সময়ের মধ্যে এই হত্যাকান্ডের তদন্ত সমাপ্ত করে হত্যার মোটিভ (প্রকৃত কারণ), প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত, গ্রেপ্তার ও বিচারের সম্মুখীন করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। কিন্তু রুঢ় সত্য ও বাস্তবতা হলো, দীর্ঘ সাত বছর অতিক্রান্ত হতে চললেও এ হত্যা মামলার তদন্ত কার্যক্রম সমাপ্ত এবং প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তদন্ত কর্মকর্তার বরাত দিয়ে আদালত বলেছে, এই মামলায় এ পর্যন্ত মোট ৮ ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হলেও এই হত্যাকান্ডের সাথে তাদের কারও সম্পৃক্ততার প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেননি। এফবিআই ৪ ব্যক্তির ডিএনএ শনাক্ত করেছে। তার মধ্যে ২টি ডিএনএ সাগর-রুনির। বাকি দুটি ডিএনএ'র সাথে গ্রেপ্তার আসামিদের ডিএনএ ম্যাচ করেনি। অর্থাৎ ওই দুই ব্যক্তিকে এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। আমেরিকার বিশেষায়িত ল্যাবরেটরিতে ডিএনএ'র উপর ভিত্তি করে সম্ভাব্য অপরাধীদের 'অবয়ব' তৈরির চেষ্টা চলছে।" চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও দোষীদের চিহ্নিত এবং গ্রেপ্তার করতে না পারলে চৌকস বাহিনীর্ যাবের অন্য সব সাফল্য ম্স্নান হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছে আদালত। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পি। তানভীর রহমানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। সময় পেছাল ৬৯ বার মামলা তদন্তের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে একের পর এক সময় নিচ্ছের্ যাব। ফলে নিম্ন আদালতে পড়ছে শুধু মামলার তারিখ, কিন্তু প্রতিবেদন আসছে না। ঢাকার আদালতে বৃহস্পতিবারও সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তা জমা দিতে পারেননি বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার শফিকুল আলম। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এফবিআইর ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি উলেস্নখ করে তিনি আবারও সময় চেয়ে আবেদন করেন। মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস তখন ৩০ ডি?সেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের নতুন দিন ধার্য করেন। আদালত কর্মকর্তারা জানান, এ? নি?য়ে এই মামলায় প্রতিবেদনটি দা?খি?লের তা?রিখ ৬৯ বার পেছাল। হত্যাকান্ডের পরদিন রুনির ভাই নওশের আলী রোমান বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মামলাটির তদন্ত করেন শেরেবাংলা নগর থানার এক কর্মকর্তা। ১৬ ফেব্রম্নয়ারি মামলার তদন্তভার পড়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলমের ওপর। ৬২ দিন পর ডিবি ব্যর্থতা স্বীকার করে নিলে হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায়র্ যাব।র্ যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার হাত ঘুরে এখন তদন্ত করছেন খন্দকার শফিকুল আলম।