শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের মারধর, রাবিতে মহাসড়ক অবরোধ

প্রকাশ | ১৭ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

রাবি প্রতিনিধি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী সোহরাব মিয়াকে বেধড়ক পেটানোর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করেছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধনের মাধ্যমে প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কের দুপাশে দীর্ঘ যানযট হয়। ফলে যানবাহনগুলো বিকল্প সড়ক দিয়ে চলাচল করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক অবরোধকালে শিক্ষার্থীরা 'আমার ভাই আহত কেন প্রশাসন জবাব চাই, শিক্ষা সন্ত্রাস একসাথে চলে না, সন্ত্রাসীদের আস্তানা ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও, এক দফা এক দাবি বহিষ্কার বহিষ্কার' ইত্যাদি স্স্নোগান দেয় তারা। এদিকে এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনোপ্রকার সহযোগিতা বা আশ্বাস না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলেন, 'প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন যখন দুর্নীতিতে জর্জরিত। যেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর চলে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের অমানুষিক নির্যাতন। সোহরাব কি করেছিল? ওর মতো সাধারণ ছেলেদের ওপর ক্যাম্পাসের সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। ছাত্রলীগের লাগামহীনতার বিরুদ্ধে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় বারবার তারা এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে। আমরা আর এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ালেখা করতে এসেছি, সন্ত্রাসীদের দ্বারা আক্রান্ত হতে আসিনি।' এ সময় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী নাহিদ, আসিফসহ যারা হত্যাচেষ্টায় জড়িত তাদের গ্রেপ্তার, সর্বোচ্চ শাস্তি এবং স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা, হলে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হল প্রভোস্টের পদত্যাগ এবং আহত শিক্ষার্থীর সকল চিকিৎসার খরচ ও মামলার সকল দায়িত্ব প্রশাসনকে বহন করার দাবি জানান তারা। সূত্রে জানা যায়, ল্যাপটপ চুরির সন্দেহে ছাত্রলীগকর্মী আসিফ লাকের নেতৃত্বে শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলের তৃতীয় বস্নকের ২৫৪ নম্বর কক্ষে সোহরাবকে নিয়ে যান। সেখানে নানা রকম কথা জিজ্ঞাসা করে ছাত্রলীগকর্মী আসিফ লাক ও হুমায়ুন কবির নাহিদ। একপর্যায়ে তারা দুজন মিলে সোহরাবকে রড দিয়ে সোহরাবের মাথা ও হাতে পিটাতে থাকে। এতে রক্তাক্ত হলে তারা মারধর বন্ধ করে। পরে তার বন্ধুরা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে পরে রামেকে ভর্তি করে। সেখানে তার মাথায় ১৫টি সেলাই দেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে তাকে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য ইসলামী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে মারধরের ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত আসিফ ও নাহিদের মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে। তাদের বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সোহরাবের এক সহপাঠী জানান, গত কয়েকদিন থেকেই আসিক লাক সোহরাবকে নানাভাবে অত্যাচার করে আসছে। দুইদিন আগেও আসিফ লাক তাকে ডেকে নিয়ে চড় থাপ্পড় মেরেছিল। এদিকে রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটলেও সকাল ৯টা পর্যন্ত কোনো খবর পাননি শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জুলকারনাইন। তিনি জানান, অনেক রাতে ঘটনা হওয়ায় জানতেন না তিনি। এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি বলে জানান তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, 'আমার এক আত্মীয় ঢাকার এক হাসপাতালে আইসিইওতে রয়েছে। আমি সেখানে আছি' বলে জানান তিনি।