নদী খননের টাকায় বিদেশে প্রশিক্ষণ-সড়ক নির্মাণ প্রস্তাব

প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি রিপোর্ট তিতাস নদী খনন প্রকল্পের টাকা থেকে বৈদেশিক প্রশিক্ষণ খাতে ৫০ লাখ, কুমিলস্না শাকতলা বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কলোনির সড়ক ও অফিস ভবন নির্মাণে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৬১ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে। নদী খননের টাকায় বৈদেশিক প্রশিক্ষণ ও সড়ক নির্মাণের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পরিকল্পনা কমিশন। এই বিষয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) কাছে সঠিক ব্যাখ্যা চেয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। 'কুমিলস্না জেলার তিতাস ও হোমনা উপজেলার তিতাস (লোয়ার তিতাস) পুনঃখনন' প্রকল্পের আওতায় দুই খাতে প্রায় দুই কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৭৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। মোটা দাগে প্রকল্পের আওতায় ৪৫ কিলোমিটার নদী পুনঃখনন খাতে ৪৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে বাপাউবো'র প্রস্তাব এখনো চূড়ান্ত হয়নি। পরিকল্পনা কমিশন বাপাউবো'র প্রস্তাবিত ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) যাচাই-বাছাই করে দেখছে। এই বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনে আগামী বুধবার (২০ নভেম্বর) প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেই সভায় সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পলস্নী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সহকারী প্রধান (সেচ উইং) মারিয়াম খাতুন বলেন, প্রকল্পের আওতায় বাপাউবো'র প্রস্তাবনা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। সামনে পিইসি সভায় এ নিয়ে আলোচনা হবে। সড়ক নির্মাণ ও বৈদেশিক প্রশিক্ষণ বাবদ যে বরাদ্দ চেয়েছে সেই বিষয়ে বাপাউবো'র হয়তো কোনো যুক্তি থাকতে পারে। সবকিছুই পিইসি সভায় চূড়ান্ত হবে। নদী খনন প্রকল্পের আওতায় বৈদেশিক প্রশিক্ষণ ও কলোনির সড়ক মেরামতের কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে। কোন দেশে বৈদেশিক প্রশিক্ষণ হবে এই বিষয়ে কিছুই উলেস্নখ করা হয়নি। প্রকল্পের আওতায় শুধু ১০ জন কর্মকর্তার বৈদেশিক প্রশিক্ষণ বাবদ টাকা চাওয়া হয়েছে। নদী খনন কাজে বৈদেশিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা পরিকল্পনা কমিশনে জানাতে পারেনি বাপাউবোর'র প্রতিনিধি দল। এই বিষয়ে বাপাউবোর'র প্রতিনিধি বলেন, রাজস্ব বাজেট থেকে সড়ক মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান না পাওয়ায় প্রকল্পের আওতায় এই মেরামত কাজের প্রস্তাব করা হয়েছে। পাউবো সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় তিতাস নদী পুনঃখননের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশন করে জলাবদ্ধতা দূর ও অনাবাদী জমি আবাদযোগ্য করা হবে। ভরাট হয়ে যাওয়া নদী পুনঃখনন ও ড্রেজিং করে দ্রম্নত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা করা হবে। নৌ চলাচল সুবিধা বাড়িয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো হবে। নদী খননের মাধ্যমে সেচযোগ্য পানির মজুদ বাড়ানোও প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য। বাপাউবো সূত্র জানায়, নানা কারণে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হচ্ছে। কুমিলস্না জেলার হোমনা উপজেলাধীন দুলালপুর নামক স্থান দিয়ে লোয়ার তিতাস কুমিলস্না জেলায় প্রবেশ করে। এরপরে চন্ডীপুর, ভাষানিয়া, কাশিপুর পঞ্চবটি, আসাদনগর দিয়ে হোমনা ও তিতাস উপজেলার মধ্যে প্রবাহিত হয়। তিতাস উপজেলার লালপুর নামক স্থানে গোমতি নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। তিতাস ও গোমতি নদীর মিলিত স্রোত দাউদকান্দি উপজেলায় মেঘনা নদীতে পতিত হয়েছে। বর্তমানে লোয়ার তিতাস নদীটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় নাব্য অনেকটাই কমে গেছে। হোমনা ও তিতাস উপজেলায় অবস্থিত ভরাট হয়ে যাওয়া নদী খননের মাধ্যমে সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন, নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, কৃষি উৎপাদন বাড়ানো এবং নদী পথের নাব্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বাপাউবো ২০১৮ সালে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করে। এই কারিগরি কমিটির সুপারিশের আলোকে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে।