শ্রমিকদের দাবি সড়ক পরিবহণ মন্ত্রণালয়ে

ট্রাফিক সচেতনতা পক্ষ উদ্বোধন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ | ২২ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বৃহস্পতিবার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ট্রাফিক সচেতনতা পক্ষ উদ্বোধন করেন -যাযাদি
পরিবহণ শ্রমিকদের ৯ দফা দাবি সড়ক পরিবহণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান বলেন, এসব দাবি অনুযায়ী আইনে কোথাও অসঙ্গতি থাকলে তা যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগরে রাজারবাগ পুলিশ অডিটরিয়ামে আয়োজিত ট্রাফিক সচেতনতামূলক পক্ষ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ২১ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা মেট্রোপলিটনে (ডিএমপি) চলবে ট্রাফিক সচেতনতামূলক পক্ষ। এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে বেলুন উড়িয়ে এর উদ্বোধন করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পরিবহণ চালকদের লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে একটা জটিলতা ছিল। সেটি নিয়ে গতকাল বুধবার রাতে আলোচনা হয়েছে। তাদের দেওয়া দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। লাইসেন্স সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের জন্য চালকদের একটা সময় দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তারা তাদের লাইসেন্স ঠিক করে নেবে। আইন না মানা আমাদের সংস্কৃতি হয়ে গেছে উলেস্নখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কেউ আইন মানতে চায় না। যদি সবাই আইন মেনে চলে তবে কোনো সমস্যা থাকে না। শুধু ট্রাফিক আইন নয়, সব পর্যায়ে সবাই আইন মেনে চললে অপরাধ অনেক কমবে। সব পর্যায়ে আইন মেনে চলার সংস্কৃতি চালু হোক- এটাই আমার চাওয়া। 'মহাসড়কে যারা বাস-ট্রাক চালায়, তাদের দীর্ঘক্ষণ গাড়ি চালাতে হয়। তাই তাদের নির্দিষ্ট সময় পর বিশ্রামের প্রয়োজন। একটা চালক ৮ ঘণ্টা গাড়ি চালানোর পর তাকে বাধ্যতামূলক বিশ্রাম নিতে হবে। মহাসড়কে বিভিন্ন জায়গায় চালকদের বিশ্রামের জন্য বিশ্রামাগার তৈরির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে।' বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, পুলিশের কেউ যদি সড়কে আইন প্রয়োগ করে তবে এর জন্য কোনো কর্মকর্তা বদলি হবেন না। এটা আমি আশ্বস্ত করছি। তবে সবার ব্যবহার বিনয়ী হতে হবে। তিনি বলেন, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে প্রধানত 'ট্রিপল ই' বিবেচনায় রাখা হয়। ইঞ্জিনিয়ারিং, এডুকেশন, এনফোর্সমেন্ট। এসব নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ছাড়াও কয়েকটি সংস্থা কাজ করে (যেমন- সিটি করপোরেশন, রাজউক, বিআরটিএ)। এর মধ্যে পুলিশ শুধু এনফোর্সমেন্ট দেখে। কিন্তু সড়কে কোনো সমস্যা হলে সবাই ট্রাফিক পুলিশকে দোষারোপ করেন। একটা সিটির রাস্তা থাকা প্রয়োজন ২৫ শতাংশ। কিন্তু আমাদের আছে মাত্র ৮ শতাংশ। এটা আদর্শ একটি সিটির তিন ভাগের এক ভাগ থেকেও কম। তবুও এটুকু সড়ক ব্যবহার করা হয় না। জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, সড়কে সব স্থানে বাস না থামলেও বাস থামার নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে। কিন্তু চালকরা সেটা না মেনে বাসস্টপের আগে বা পরে থামে। এর জন্য সবাইকে আইন মেনে চলতে হবে। 'ট্রাফিক শৃঙ্খলা একটি সভ্য জাতির প্রতীক স্স্নোগান নিয়ে আমরা সবাইকে সচেতন করার লক্ষ্যে ট্রাফিক সচেতনতামূলক পক্ষ শুরু করেছি।' ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, সড়কে যদি চালক পথচারী ও যাত্রীদের মধ্যে শৃঙ্খলা থাকে, তবে আমাদের মামলা করার কোনো প্রয়োজন নেই। যারা রাস্তায় সবাই আগে যেতে চায়। এ পালস্নাপালিস্নর কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। তাই আইন মেনে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করলে কোনো বিপদ আসবে না। 'নতুন আইনে কোনো চালককে একবার জরিমানা করলে তার সারা মাসের উপার্জন শেষ হয়ে যাবে। তাই আমরাও তাদের জরিমানা করছি, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে সড়কে আইন ভঙ্গ করছে।' বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উলস্নাহ বলেন, একটি মহল নিরীহ পরিবহণ শ্রমিকদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। পেঁয়াজ-লবণের পর গুজব পরিবহণ সেক্টরে ভর করেছে। দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে তারা। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রীও বলেছেন, নতুন আইনে কোনো সংশোধনী থাকলে তা দেখা হবে। আগামী জুন মাস পর্যন্ত যার যে লাইসেন্স আছে তাই দিয়ে যানবাহন চালানো যাবে। তবে অবৈধ কোনো লাইসেন্স পেলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।