শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
বুড়িগঙ্গা দূষণ

ঢাকা ওয়াসার বিভ্রান্তিমূলক তথ্যে হাইকোর্টের উষ্মা

নতুনধারা
  ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট

বুড়িগঙ্গা নদীতে গিয়ে পড়া পয়ঃনিষ্কাশনের নালা নিয়ে বিপরীতমুখী বিভ্রান্তিমূলক প্রতিবেদন দাখিল করায় ঢাকা ওয়াসার প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেছে উচ্চ আদালত।

ঢাকার নদী দূষণ রোধে করা এক রিট আবেদন নিয়ে শুনানির সময় মঙ্গলবার বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উলস্নাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ সংস্থাটির আইনজীবীকে ভর্ৎসনা করে।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা আবেদনটির পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি আইনজীবী মনজিল মোরসেদ শুনানি করেন।

ওয়াসার পক্ষে শুনানিতে আইনজীবী এ এম মাছুম, পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী আমাতুল করিম ও বিআইডবিস্নউটিএর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মফিজুর রহমান।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডবিস্নটিএ) প্রতিবেদনে উলিস্নখিত ৬৮টির বাইরে ওয়াসার আর কোনো পয়ঃনিষ্কাশন নালা বুড়িগঙ্গায় পড়ে থাকলে সেগুলো বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

নির্দেশনাটি বিআইডবিস্নটিএকেই বাস্তবায়ন করে আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যে হলফনামা দিতে বলেছে আদালত। আগামী রোববার পরবর্তী আদেশের জন্য রেখে আদালত বলেছে, যদিও এই ৬৮টি পয়ঃপ্রণালি লাইন বন্ধ করার দায়িত্ব ওয়াসার। তাদেরই এগুলো বন্ধ করা উচিত।

এছাড়া সদরঘাট থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত বুড়িগঙ্গার উত্তর পাড়ে বন্ধ করা ১৮ কারখানার বাইরে অবৈধ কোনো কারখানা থাকলে সেগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরকে হলফনামা দিতে বলেছে আদালত।

পরে মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, বিআইডবিস্নটিএর প্রতিবেদনে ওয়াসার ৬৮টি নালা বুড়িগঙ্গায় গিয়ে পড়েছে বলে উলেস্নখ করা হয়েছিল। কিন্তু এক হলফনামায় ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেছেন, বুড়িগঙ্গায় ওয়াসার কোনো পয়ঃপ্রণালি লাইন নেই। আবার আরেক হলফনামায় বলেছেন ১৬টি আছে।

শুনানিতে ওয়াসার আইনজীবী 'যথাযথ প্রক্রিয়ায় দাখিল করা হয়নি' উলেস্নখ করে হলফনামা প্রত্যাহার করে নিতে চাইলে আদালত হলফনামা দুটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন।

এ সময় ওয়াসার আইনজীবীকে উদ্দেশ করে জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, 'বুড়িগঙ্গার দূষণ রোধে আদালতের আদেশ আছে, রায় আছে, অন্তর্র্বর্তী আদেশ আছে। আপনারা তা না করে এরকম ফলস প্রতিবেদন দিলেন। আবার বললেন ১৬টি লাইন আছে।

"আপনি একটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের একজন আইনজীবী। মনে হচ্ছে, আপনাদের বোধদয় হয়নি। ২০১১ সালের আদেশ। হাইকোর্টের আদেশ কেউই বোস্তবায়ন করেনি। কিন্তু তারা কেউই এভাবে দাবি করেনি। আপনারা স্পষ্ট করে বললেন, ওয়াসার কোনো লাইনই নেই। প্রতিবেদন দিয়ে আপনারা আদালতকে বিভ্রান্ত করেছেন।''

এ সময় ওয়াসার আইনজীবী সময় চাইলে জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, 'কেন সময় দিব? আপনি তো কমপস্নাই (বাস্তবায়ন প্রতিবেদন) দিয়েছেন সময় কেন দিব?'

তখন আইনজীবী বলেন, 'হলফনামা আমরা টেকব্যাক করতে চাই। বিচারক বলেন, টেকবেক হবে না।'

এ পর্যায়ে 'নট প্রেস' করতে চান আইনজীবী। বিচারক আবার বলেন, কেন টেকবেক করতে চান? আইনজীবী কিছু না বলেই ডায়াসে দাঁড়িয়ে থাকেন।

তখন রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য ওয়াসার এমডির প্রতি কঠোর আদেশ চাইলে বিচারক বলেন, "মামলাটি চলমান রাখা হয়েছে। আগের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য আবার আরেক নির্দেশনা দিতে চাই না।

"তাছাড়া ওয়াসার এমডির চাকরি গেলে কি বুড়িগঙ্গার পানি বিশুদ্ধ হয়ে যাবে? যাবে না। কিছু না হওয়ার চাইতে কিছু হওয়া ভাল।"

আদালত ওয়াসার আইনজীবীকে নতুন করে হলফনামা জমার আদেশ দিয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য রোববার দিন রাখেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<78391 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1