হাসপাতালে নবজাতক রেখে মায়ের পলায়ন

প্রকাশ | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

চাঁদপুর প্রতিনিধি
১৫ দিনের নবজাতককে ফেলে রেখে পালিয়ে গেলেন এক মা। চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ইতোমধ্যে কন্যাশিশুটিকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যাচ্ছেন কয়েকজন নিঃসন্তান দম্পত্তি। তাদের কেউ কেউ শিশুটিকে লালন পালন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. সুজাউদ-দৌলা রুবেল জানান, অপরিণত বয়সে জন্ম নেওয়া শিশুটি প্রথমদিকে অসুস্থ থাকলেও সেবা-যত্ন পেয়ে এখন বেশ সুস্থ। শেষ পর্যন্ত প্রকৃত অভিভাবক না এলে নিয়ম মেনেই এ ব্যাপরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে এই নবজাতককে দত্তক নিতে ইতোমধ্যে ১৫ জনেরও বেশি ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। হাসপাতালের সিনিয়র নার্স মুক্তি রাণী দাস জানান, গত ১৫ দিন আগে এখানে জন্মের পর চার দিন প্রসূতি ও নবজাতক একসঙ্গে ছিলেন। পরে চলেও যান তারা। কিন্তু ঠান্ডাজনিত সমস্যা হওয়ায় শিশুটিকে নিয়ে আবারও হাসপাতালে ভর্তি হন শিশুটির মা। গত বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালের চতুর্থ তলায় নারী ও শিশু ওয়ার্ডের একটি বেডে শিশুটিকে একা ফেলে রেখে চলে যান মা। বাচ্চার কান্নার শব্দ শুনে এ সময় সেখানে ছুটে যান কর্তব্যরত নার্স। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরও শিশুটির পাশে আসেনি তার মা। এই নিয়ে পুরো হাসপাতালে হইচই পড়ে যায়। চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহতলী গ্রামের নাম ঠিকানা ব্যবহার করে 'সাথী' নামে হাসপাতালে ভর্তি হলেও সেখানে এই ঠিকানায় তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। হাসপাতালের রেজিস্ট্রি খাতায় মেয়ের নানার নাম তাজুল ইসলাম লেখা ছিল। এ নিয়ে বেকায়দায় পড়েন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিকে হাসপাতালে ফেলে যাওয়া শিশুটিকে নিয়ে যেতে অনেকেই আগ্রহ দেখিয়েছেন। ইতোমধ্যে একজন মা তার বুকের দুধ খাওয়াতে শুরু করেছেন। তিনি নিয়মিত শিশুটির দেখাশুনাও করছেন। হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্স ও কুলসুমা বেগম নামের এক নারী গত তিন ধরে শিশুটির দেখাশুনা করে সুস্থ করে তুলেছেন। কুলসুমা বেগম বলেন, 'আমি শিশুটিকে মায়ের আদর-স্ন্নেহ দিয়ে লালন-পালন করছি। তাকে পালনের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলেছি। কিন্তু তারা (কর্তৃপক্ষ) কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি।' ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের সমাজসেবা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, সরকারি নিয়ম মেনেই নবজাতকের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।