চলে গেলেন অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায়

প্রকাশ | ১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
অধ্যাপক অজয় রায়
ছেলে জঙ্গি হামলায় নিহত হওয়ার পর ভেঙে গিয়েছিল মন, সেই শোক সইতে না পেরে স্ত্রীও গত হয়েছিলেন বছরখানেক আগে; অভিজিৎ রায় হত্যার বিচার শেষ হওয়ার আগেই চিরবিদায় নিলেন তার বাবা অধ্যাপক অজয় রায়। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃতু্য হয় বলে হাসপাতালের পরিচালক শহীদুল হক মলিস্নক জানান। শিক্ষা আন্দোলনের অগ্রপথিক, পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা অজয় রায়ের বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ২৫ নভেম্বর থেকে বারডেম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অধ্যাপক অজয় রায়। ধীরে ধীরে শ্বাসকষ্ট বাড়লে দুইদিন পর থেকে তাকে কৃত্রিম শ্বাস দেওয়া হচ্ছিল। শিক্ষা আন্দোলন মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক অজয় রায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অবসরে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির ইউজিসি অধ্যাপক ছিলেন অজয় রায়। একুশে পদকপ্রাপ্ত এই পদার্থবিদের দুটি গবেষণা নোবেল কমিটিতে আলোচিত হয়। মুক্তিযোদ্ধা অজয় রায়ের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল ভাষা আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণঅভু্যত্থানেও। ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রম্নয়ারি একুশের বইমেলা থেকে বেরিয়ে হত্যাকান্ডের শিকার হন অজয় রায়ের বড় ছেলে প্রবাসী লেখক অভিজিৎ রায়। সেদিন উগ্রবাদীদের হামলার শিকার হয়ে হাতের আঙুল হারান অভিজিতের স্ত্রী বস্নগার রাফিদা আহমেদ বন্যাও। অজয় রায়ের অসুস্থতার খবর ফেসবুকে শেয়ার করে সম্প্রতি বন্যা লিখেছেন, 'কী পূর্ণ এবং স্বার্থক একটা জীবনই না কাটিয়েছেন বাবা। কিন্তু তার পরক্ষণেই মনে হলো গত পাঁচ বছরে যে কষ্ট পেয়েছেন, সেটাও তো বলার মতো না। সেই ২০১৫ থেকেই উনি যে ভেঙে পড়তে শুরু করেছেন, সেটা আর ঠিক হয়নি। এই বছরের শুরুতে অভির মা মারা যাওয়ার পর সেই ভেঙে পড়াটা শুধু ত্বরান্বিতই হয়েছে।' প্রধানমন্ত্রীর শোক একুশে পদকপ্রাপ্ত পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক অজয় রায়ের মৃতু্যতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার বিকালে একটি শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী তার আত্মার মাগফেরাতও কামনা করেন। একইসঙ্গে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। অধ্যাপক অজয় রায় বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও মুক্তমনা বস্নগের প্রতিষ্ঠাতা নিহত অভিজিৎ রায়ের বাবা। তিনি গত ২৮ অক্টোবর আদালতে গিয়ে ছেলেহত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। শিক্ষা আন্দোলন মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক অজয় রায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাতাদেরও একজন। সবশেষ তিনি নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা ছিলেন। পদার্থবিদ অজয় রায়ের দুটি গবেষণা নোবেল কমিটিতে আলোচিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অবসরে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির ইউজিসি অধ্যাপকও ছিলেন অজয় রায়। মুক্তিযোদ্ধা অজয় রায়ের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল ভাষা আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণ-অভু্যত্থানেও।