তাঁত বোর্ডের সভা

শিল্পের উন্নয়ন না করেই ভাতা বৃদ্ধির পাঁয়তারা!

সভায় উপস্থিতির জন্য সদস্যরা বর্তমানে ২ হাজার ৫০০ টাকা বৈঠকি ভাতা পেয়ে থাকেন। তা বৃদ্ধি করে ৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে

প্রকাশ | ১১ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
হাসান আরিফ বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে গিয়ে ঠেকা তাঁত শিল্পের অভিভাবকরা শিল্পের উন্নয়নে মনোযোগী না হয়ে নিজেদের বৈঠকি ভাতা বৃদ্ধিতে মনোযোগী হয়েছেন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে তাঁত বোর্ডের কর্তারা নিজেদের ভাতা শতভাগ বৃদ্ধির অনুমোদন দিয়েছেন। এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য আবার তদবিরও করছেন। জানা গেছে, বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের পর্ষদ সভায় উপস্থিতির জন্য সদস্যরা বর্তমানে ২ হাজার ৫০০ টাকা বৈঠকি ভাতা পেয়ে থাকেন। বর্তমানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সম্মানি হারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে তাঁত বোর্ডের পর্ষদ সভার সদস্যদের বৈঠকি ভাতার হার বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। সূত্র জানায়, সম্প্রতি তাঁত বোর্ডের পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় উপস্থিতির জন্য সভার সভাপতি বোর্ড চেয়ারম্যানসহ সব সদস্যের বৈঠকি ভাতা ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৫ হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকের কার্যবিবরণীতে বলা হয়, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড আইন-২০১৩ এর ১০ নং অনুচ্ছেদে উলেস্নখ আছে 'সভায় উপস্থিতির জন্য প্রত্যেক সার্বক্ষণিক সদস্য ও অন্যান্য সদস্যরা বোর্ড কর্তৃক, সরকারের অনুমোদনক্রমে, নির্ধারিত হারে সম্মানি প্রাপ্য হইবেন।' এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডে আইন-২০১৩ ও পর্ষদ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বোর্ড চেয়ারম্যান/সভার সভাপতিসহ সব সদসের উপস্থিতির জন্য বৈঠকি ভাতা ৫ হাজার টাকা দেয়ার জন্য সরকারের কাছে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়। এই সংক্রান্ত একটি চিঠি এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। সম্মানি বাড়ানোর জন্য তাঁত বোর্ডের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আরো কিছু যুক্তি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে, ২০১৬ সালের জুলাই পর্ষদ সভায় বাংলাদেশ পলস্নী উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের বৈঠকি ভাতা ৪ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়। পলস্নী বিদু্যতায়ন বোর্ডের বোর্ড সভায় অংশগ্রহণের জন্য বোর্ডের সদস্যদের বৈঠকি ভাতা বর্তমানে ৬ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী বোর্ড সভার সব সদস্যের সম্মানি ভাতা দেয়া হয়। তাই তাদের জন্যও সম্মানি বাড়ানো প্রয়োজন। প্রযুক্তির বিকাশ যখন তাঁতিদের এ পেশা পরিত্যাগে বাধ্য করছে তখনও অনেকেই সনাতন পদ্ধতিতেই এ পেশায় থেকে জীবিকা নির্বাহ করছেন। দিন দিন মানুষ যেখানে উন্নতির মুখ দেখে, সেখানে তাঁত শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা রয়েছে অনেক পিছিয়ে। যদিও দিন দিন তাঁতের সংখ্যা বাড়ছে তবুও জীবনযাত্রার মান রয়েছে সেই আগের জায়গায়। তাঁত শিল্পের উজ্জ্বল সম্ভাবনা, সুদক্ষ তাঁত শিল্পী, সহজ শর্তে তাঁত ঋণ প্রদান ও ঋণ বিতরণে বৈষম্য এবং পর্যাপ্ত উপকরণ সরবরাহ, বাজারজাতকরণের ব্যবস্থাসহ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তাঁত শিল্পের গৌরব উদ্ধার করা সম্ভব।