রোহিঙ্গা ইসু্যতে ঢাকার উদ্বেগের কথা জানালেন সেনাপ্রধান

প্রকাশ | ১১ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রধান মিন আং হ্লাইয়াং -সংগৃহীত
বাংলা ট্রিবিউন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রধান মিন আং হ্লাইয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গাসহ বিভিন্ন ইসু্যতে বাংলাদেশের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। সোমবার মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোয় দুই দেশের সেনাবাহিনীর প্রধানের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মিয়ানমারের সামরিক হেলিকপ্টার ও ড্রোনের বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে ড্রোন পাঠানোর বিষয়টিও বৈঠকে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন জেনারেল আজিজ আহমেদ। মিয়ানমারের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, দুই দেশের সেনাবাহিনী প্রধানের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফেরত যেতে কেন নিরুৎসাহিত, সেই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বৈঠকে তুলে ধরেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান। তখন মিয়ানমারের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, এশিয়ান হিউম্যানিটারিয়ান ইমারজেন্সি রেসপন্স টিম এবং রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিকে খুব শিগগির সেটেলমেন্ট এলাকা পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানানো হবে। সূত্র মতে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দ্বিতীয় যে বিষয়টি তুলে ধরা হয় সেটি হচ্ছে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে স্থলমাইন এবং আইইডি'র (ইম্প্রোভাইজড এক্সপেস্নাসিভ ডিভাইজ)। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয়টি জানানোর পর বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে পরিকল্পিত বর্ডার রোড নির্মাণে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) বাংলাদেশকে সর্বাত্মক সহযোগিতার নিশ্চয়তা দেয়। সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মাদক কারখানার উপস্থিতি এবং সেই মাদক বাংলাদেশে প্রবেশেও বাংলাদেশের উদ্বেগের কথা জানানো হয় বৈঠকে। মাদক পাচারের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনী সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় যেকোনও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে ভুল বোঝাবুঝি নিরসনে কাজ করতে সম্মত হয় দুই পক্ষ। মিয়ানমার সেনাবাহিনী কেবল মাত্র কাউন্টার ইনসার্জেন্সি অপারেশনের জন্য সীমান্ত এলাকায় তাদের সেনা সমাবেশ ঘটায় বলে জানায়। দুই দেশের সীমানা অতিক্রম না করার বিষয়ে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে তারা। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় যেহেতু মিয়ানমার সেনাবাহিনী কাউন্টার ইনসার্জেন্সি অপারেশন পরিচালনা করছে, তাই তারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাহায্য চেয়েছে। যখন মিয়ানমার সেনাবাহিনী বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় এই অপারেশন পরিচালনা করবে, তখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যেন বাংলাদেশ ভূখন্ড থেকে সীমান্ত এলাকায় তাদের সহায়তা করে, যাতে তাদের ইনসার্জেন্ট গ্রম্নপ তাড়া খেয়ে বাংলাদেশ ভূখন্ডে ঢুকে আশ্রয় নিতে না পারে। দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম বাড়ানো, বিভিন্ন পর্যায়ের সৌজন্যমূলক ভিজিট বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। দুই দেশের সেনাবাহিনী প্রধানদের বৈঠক সম্পর্কে জানতে চাইলে ইয়াঙ্গুনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মনজুরুল করিম খান চৌধুরী মঙ্গলবার বলেন, দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তাদের বৈঠকে বেসামরিক কোনও কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন না। তাছাড়া নেপিদো থেকে ইয়াঙ্গুনে এখনও বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান আসেননি। তাই বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে তিনি এখনও জানতে পারেননি।