শীতের শুরুতেই সাভারে গোলাপ কেনাবেচা তুঙ্গে

প্রকাশ | ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সাভারের বাগানে ফুটন্ত গোলাপ
প্রতিবছর শীতের মাঝামাঝি গোলাপ ফুল বেশি বেচাকেনা হলেও এবার শীতের শুরুতেই জমজমাট হয়ে উঠেছে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নে তুরাগ নদীর তীরে গোলাপ গ্রামটি। অন্য বছরগুলোতে বছরের বারোমাসের তিন মাস গোলাপ উৎপাদন ও বিক্রি নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন ওই গ্রামের চাষিরা। প্রতিবছরের শীতের শুরুতে ২৫০ হেক্টর জমির ওপর লাগানো গোলাপ চারাগুলোর পরিচর্যা শুরু করে দেন প্রায় দুই শতাধিক চাষি। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গোলাপ গ্রামের লালচে মাটিতে চাষিদের কারও এক বছর আবার কারও দুই বছর এমনকি তিন বছর আগের লাগানো গোলাপ গাছ রয়েছে। এসব গাছের ফুল তুলে বিক্রি শুরু করেছেন অনেক চাষি। গোলাপ গ্রামের প্রায় অর্ধেক চাষি গরমকালে ফুল চাষ থেকে বিরত থাকেন। গোলাপ চাষিদের অভিযোগ, বছরের নয় মাস তাদের খুব কষ্টে জীবন-যাপন করতে হয়। কারণ ওই সময় ফুল উৎপাদন হলেও তেমন বিক্রি হয় না। গাছের ফুল গাছেই শুকিয়ে যায়। তাই বছরের নয় মাস জীবিকার তাগিদে ভিন্ন পেশায় চলে যান গোলাপ গ্রামের ফুল চাষি ও শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের সাদুল্যাপুর, বাগ্নীবাড়ী, মোস্তাপাড়া, আকরান গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ চাষ হচ্ছে গোলাপ এবং উৎপাদন করা হচ্ছে গোলাপের চারা। এছাড়া কারও বাড়ির আঙিনা, সড়কের পাশে, এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনের ফাঁকা জায়গাতে গোলাপ চাষ করা হয়েছে। গোলাপ গ্রামে দুপুরের পর প্রতিটি বাগানেই শ্রমিকদের ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায়। এ সময় কেউ ফুল তুলে আঁটি বাঁধেন, কেউ বাছাই করেন আবার কেউ গোলাপ পানিতে ভেজাতে ব্যস্ত থাকেন। এ কাজগুলো সন্ধ্যার আগেই শেষ করেন কৃষকরা। কারণ সন্ধ্যার পরই জমে ওঠে সাভারের মোস্তাপাড়া ও শ্যামপুরের ফুল বাজার। ব্যবসায়ীরা এখান থেকে ফুল কিনে দেশের বিভিন্ন ফুলের দোকানসহ ও রাজধানীর শাহবাগে সরবরাহ করেন। মোস্তাপাড়া গ্রামে গোলাপ বাগানে কথা হয় কৃষক আলাউদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এ গ্রামের ৯০ শতাংশ মানুষের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস ফুলচাষ। এখানে লাল, হলুদ ও সাদা গোলাপের চাষ হয়। তবে বাজারে চাহিদা বেশি লাল গোলাপের। যদি সরকার ফুল রপ্তানিতে ভূমিকা রাখে তবে এর চেয়ে বেশি গোলাপ বিক্রি হবে। সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজিয়াত হোসেন বলেন, 'বিশেষ করে ডিসেম্বরের এ সময়টিতে দেশে ফুলের চাহিদা বেশি থাকে। তাই চাষিরা সারাবছরের লাভ এ সময় পুষিয়ে নেন। নভেম্বরে তারা ফুলের জমি পরিচর্যা করে। ডিসেম্বরে চাষিরা ফুল তুলে বিক্রি শুরু করেন। আমরা ফুল চাষিদের সুবিধার জন্য পর্যাপ্ত চেষ্টা করছি। কৃষি বিপণনের পক্ষ থেকে বিরুলিয়াতে অ্যাসেম্বেল সেন্টার তৈরি করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখানে চাষিরা ফুলগুলোকে কাটবে, প্রসেস করবে ও পরিবহণে তুলবে। এতে ফুল বেশি দিন মজুদ থাকবে। পচে বা নষ্ট হয়ে যাবে না।' আর পরিবহণের মাধ্যমে ফুল বিক্রির জন্য অনেক দূরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলেও জানান কৃষি কর্মকর্তা নাজিয়াত।