জিয়া-খালেদা বঙ্গবন্ধুর বাড়ি কেন আসতেন, প্রশ্ন হাসিনার

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার ঢাকায় আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন Ñফোকাস বাংলা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার আগে তার ধানমÐির বাড়িতে জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী খালেদা জিয়ার যাওয়া-আসা ছিল জানিয়ে এর কারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় ‘সরাসরি জড়িত’ থাকার কারণেই জিয়াকে পরে রাষ্ট্রপতি করা হয়েছিল বলে তার বিশ্বাস। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবাষির্কী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ঢাকায় আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার এমন বক্তব্য আসে। সেই সময়ের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘মেজর জিয়া এবং তার স্ত্রী ... আমার তো মনে হয় এমন কোনো মাস নাই, তারা আমাদের বাড়িতে না আসত। এই যে ঘন ঘন আসা, এর পেছনেও কি ষড়যন্ত্র ছিল?’ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পরদিন বেতারে সেই ঘোষণা দেয়া মেজর শরিফুল হক ডালিমের (পরে লেফটেন্যান্ট কনের্ল) প্রসঙ্গ টেনেও একই কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ডালিম ২৪ ঘণ্টা আমাদের বাড়িতেই পড়ে থাকত, এমন কোনো দিন নাই আসত না।’ পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাÐের পর নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন সেনা কমর্কতার্ জিয়াউর রহমান। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সাকির্ট হাউজে এক ব্যথর্ সেনা অভ্যুত্থানে তিনি নিহত হন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিয়াউর রহমান মেজর ছিল। প্রমোশন দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই তো তাকে মেজর জেনারেল করেছিল।’ তিনি বলেন, ‘জিয়া যে রাষ্ট্রপতি হলো, সূত্রটা যদি খেঁাজেন ... জিয়া ১৫ আগস্ট হত্যাকাÐের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল বলে আমি তো বলব, একটা এজেন্ট হিসাবেই কাজ করেছিল।’ বঙ্গবন্ধু আন্তজাির্তক সম্মেলন কেন্দ্রে শোক দিবসের এই আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে বহু জ্ঞানী-গুণী মানুষ সকলে খুব বাহবা দিতে শুরু করল একটা মিলিটারি ডিকটেটর নাকি বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়ে গেছে। মেজর থেকে তিন বছরের মধ্যে মেজর জেনারেল হলো। তাকে সেনাপ্রধান করা হলো, রাতারাতি রাষ্ট্রপতি হয়ে গেল। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, ‘যেখানে মাশার্ল ল আসে, যেখানে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করা হয়, সেখানে গণতন্ত্র কী করে থাকে?’ জিয়াউর রহমানের সময় বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বাধাগ্রস্ত করার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘হত্যাকাÐের সঙ্গে জিয়া সম্পূণর্ভাবে জড়িত ছিল।’ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাÐের বিচার আটকে রাখা হয়েছিল দায়মুক্তি অধ্যাদেশ জারি করে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর তা বাতিল করলে বিচারের পথ খোলে। ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর বিচারিক আদালতের রায়ে ১৫ জনকে মৃত্যুদÐ দেয়া হয়। আপিল বিভাগ ১২ জনের মৃত্যুদÐ বহাল রাখে। ওই ১২ জনের মধ্যে পঁাচজনের ফঁাসি কাযর্কর হয়েছে ২০১০ সালে। বাকিদের একজন মারা গেছেন এবং ছয়জন পলাতক। এরা হলেনÑআব্দুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এম রাশেদ চৌধুরী, এসএইচএমবি নূর চৌধুরী, আব্দুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেমউদ্দিন। তাদের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করা হয়েছে।