দুর্লভ পরিযায়ী 'সবুজ বাটান'

প্রকাশ | ১৫ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
খাবারের সন্ধানে সবুজ বাটান
যাযাদি ডেস্ক শীত মৌসুম নিয়ে আসে দূর দেশের পাখিদের ডানা মেলার আহ্বান। কীভাবে যেন উপলব্ধি করে তারা, এখনই ডানা মেলার চূড়ান্ত ক্ষণ। এভাবেই পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে চলে পরিযায়ী পাখিরা। পাখি বিজ্ঞানীরা এসব পাখির নাম দিয়েছেন 'মাইগ্রেটরি বার্ড' অর্থাৎ পরিযায়ী পাখি। জেলার প্রসিদ্ধ সংরক্ষিত জলাভূমি বাইক্কা বিল এখন মুখর এমন সব পাখিদের কলকাকলিতে। পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে পরিযায়ীরা আসর জমিয়েছে এখানে। সৈকতে বিচরণ করা এই 'সবুজ বাটান' একটি পরিযায়ী পাখি। এর ইংরেজি নাম এৎববহ ঝধহফঢ়রঢ়বৎ এবং বৈজ্ঞানিক নাম ঞৎরহমধ ড়পযৎড়ঢ়ঁং। জলাভূমিতে যখন এরা ঘুরে ঘুরে খাবার সংগ্রহ করে তখন স্বচ্ছ পানিতে তাদের ছায়াটি অপূর্ব সৌন্দর্য নিয়ে ফুটে ওঠে। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক বলেন, এরা দেশের দুর্লভ পরিযায়ী পাখি। শীত মৌসুমে হঠাৎ হঠাৎ এদের সৈকতে ঘুরে বেড়ানো পাখিদের দলে দেখা যায়। ইউরোপ, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও ভারত উপমহাদেশের প্রায় সব দেশসহ এশিয়ায় এদের বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে। পাখিটির শারীরিক বর্ণনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর দৈর্ঘ্য প্রায় ২৩ সেন্টিমিটার এবং ওজন ৭৫ গ্রাম। প্রজননকাল ছাড়া প্রাপ্তবয়স্ক পাখির কালচে বাদামি দেহতলে খুব ছোট ফিকে তিল দেখা যায়। তাদের পেট, বগল ও চোখের সামনের ভ্রম্ন-রেখা সাদা। মাথা ও ঘাড় ছাই বাদামি এবং পা ও পায়ের পাতা জলপাই সবুজ। এর রয়েছে সোজা খাটো অনুজ্জ্বল সবুজাভ ঠোঁট। যার আগা কালো। ব্রিডিং পিরিয়ডে (প্রজননকাল) এদের পিঠে বড় সাদা তিল, ঘাড়ে ও বুকের উপরের অংশে বাদামি ডোরা হয়ে থাকে। ছেলেমেয়ে পাখির চেহারা অভিন্ন বলে জানান তিনি। সবুজ বাটানের স্বভাব সম্পর্কে ইনাম আল হক বলেন, মজার বিষয় হলো, বিরক্ত হলে এরা মাথা ওঠানাম করে রাগ প্রকাশ করে। উড়ে যাওয়ার সময় বাঁশির মতো তীক্ষ্নস্বরে ডাকে। সচরাচর একা বা জোড়ায় থাকে। লতাপাতায় ঘেরা অগভীর মিঠা পানির জলাভূমি, নদীর পাড়, বর্জ্য রাখার জায়গা, ছোট পুকুর, ডোবা, সরু খাদ ও পাহাড়ি নদীতে বিচরণ করে। অগভীর পানিতে হেঁটে নরম কাদায় ঠোঁট ঢুকিয়ে এরা খাবার খায়। শামুক ও চিংড়ি জাতীয় প্রাণী, কেঁচো, পানির অমেরুদন্ড উদ্ভিজ্জ উপাদান রয়েছে সবুজ বাটানের খাদ্য তালিকায়। এপ্রিল-জুন এদের প্রজনন মৌসুম। তখন এরা সাইবেরিয়াতে অন্য পাখির বাসায় তিন থেকে চারটি ডিম পাড়ে বলে জানান এ পাখি গবেষক।