দুই জেলায় বন্দুকযুদ্ধে রোহিঙ্গাসহ নিহত ৩

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
কক্সবাজার ও ফরিদপুরে মঙ্গলবার দিবাগত রাতের্ যাব ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কক্সবাজারের টেকনাফের্ যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ২ রোহিঙ্গা মাদক কারবারি এবং ফরিদপুরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এক ডাকাত সর্দার নিহত হয়েছেন। আমাদের উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা জানান, কক্সবাজারের টেকনাফের্ যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন।র্ যাবের দাবি, নিহত দুই ব্যক্তি মাদক ব্যবসায়ী। নিহত দুজন হলেন উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দা মোহাম্মদ আবুল হাশিম (৩০) ও একই শিবিরের মো. আইয়ুব (২৪)। মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরে টেকনাফ-কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। র?্যাব-১৫ সহকারী পুলিশ সুপার মো. শাহ আলম এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। র্ যাবের ভাষ্য, এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ১০ হাজার ইয়াবা বড়ি, দুটি ওয়ান শুটারগান, ৫টি তাজা কার্তুজ ও ৬টি খালি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ইয়াবা কারবারিদের গুলিতের্ যাবের তিনজন সদস্য আহত হয়েছেন। সহকারী পুলিশ সুপার মো. শাহ আলম বলেন, কিছু ইয়াবা ব্যবসায়ী ইয়াবা নিয়ে বাহারছড়া ইউনিয়নের শাপলাপুর এলাকা দিয়ে যাবেন, এ তথ্য পেয়ে টহল দল ওই এলাকায় যায়। সেখানে ১০ থেকে ১২ জনের একটি দলর্ যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এ সময়র্ যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট গুলিবিনিময় হয়। একপর্যায়ে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ দুজনকে উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ১০ হাজার ইয়াবা, দুটি ওয়ান শুটারগান, ৫টি তাজা কার্তুজ, ৬টি খালি খোসাও উদ্ধার করা হয়। সংঘর্ষের ঘটনার পরর্ যাবের তিন সদস্যকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রম্নত টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নেওয়া হয়। পরে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাধারণ পোশাকধারী দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের চিকিৎসক শুভ্র দে বলেন, বুধবার ভোরে পাঁচজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে সাধারণ পোশাকে থাকা দুজন হাসপাতালে আনার আগে মারা যান। আরর্ যাবের আহত তিনজনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নিহত দুজনের শরীরে তিনটি করে গুলির চিহ্ন রয়েছে। পরে পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের ৪ মে থেকে সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হলে পুলিশ, র?্যাব, বিজিবি ও মাদক ব্যবসায়ীদের প্রভাব বিস্তার এবং অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে বুধবার পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় ৪ নারীসহ ২০৫ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২ নারীসহ ৫৯ জন রোহিঙ্গা নাগরিকও রয়েছেন। এদিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' ১৩ মামলার আসামি ডাকাত সর্দার এনায়েত হোসেন (৩৫) নিহত হয়েছেন। বুধবার ভোররাতে উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বারাংকুল গ্রামের পিয় নাথ পালের মেহগনি বাগানে এ ঘটনা ঘটে। নিহত এনায়েত হোসেন একই উপজেলার চতুল ইউনিয়নের বনচাকি গ্রামের মৃত মজিবর হোসেনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে বোয়ালমারীসহ বিভিন্ন থানায় হত্যা, ধর্ষণ ও ডাকাতিসহ ১৩টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ওয়ান শুটার গান, দুটি শর্টগানের গুলি, দুটি শর্টগানের এমটি কার্তুজ, একটি চাপাতি ও একটি চাইনিজ কুড়াল উদ্ধার করা হয়। বন্দুকযুদ্ধে বোয়ালমারী থানার ওসিসহ ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জামাল পাশা জানান, একাধিক হত্যা, ডাকাতি, ধর্ষণসহ ১৩টি মামলার আসামি এনায়েতকে আটকের পর তার দেয়া তথ্য মোতাবেক অস্ত্র উদ্ধারে গেলে এনায়েতের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশের কাছ থেকে ছুটে দৌড়ে পালিয়ে যায় এনায়েত। হামলাকারীদের লক্ষ্য করে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে তারা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় বাগান থেকে গুলিবিদ্ধ এনায়েতকে উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বোয়ালমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানার হাটফাজিলপুর বাজার এলাকা থেকে কুখ্যাত ডাকাত এনায়েত হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, ডাকাতিতে ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র বোয়ালমারী থানাধীন বারাংকুলা গ্রামের জনৈক প্রিয়নাথ পালের মেহগনি বাগানে লুকানো আছে। বাগানে থাকা অস্ত্রশস্ত্রের বিষয়ে তার সহযোগী (সেকেন্ড ইন কমান্ড) মনির শিকদার অবগত আছে এবং যে কোনো সময় সে অস্ত্রগুলো সরিয়ে নেবে। এনায়েত শেখের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অস্ত্রগুলো উদ্ধারের জন্য পুলিশ ওই বাগানে অভিযানে গেলে ডাকাতদের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। তিনি আরও জানান, এনায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে বোয়ালমারী থানাসহ বিভিন্ন জেলায় ডাকাতি, দসু্যতা, অস্ত্র, খুন, ধর্ষণসহ মোট ১৩টি মামলা রয়েছে।