কুবিতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে তোলপাড়

প্রকাশ | ১৮ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, কুমিলস্না
কুমিলস্না বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আলী রেজওয়ান তালুকদারের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইংরেজি বিভাগের সান্ধ্যকালীন কোর্সের এক শিক্ষার্থী এ অভিযোগ তুলে ওই শিক্ষকের বিচার দাবি করেন। গত বুধবার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ও ইংরেজি বিভাগের প্রোগ্রাম পরিচালক ড. হাবিবুর রহমান বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি বৃহস্পতিবার রাতে ভাইরাল যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত হয়ে পড়লে এ নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও সুশীল সমাজের মাঝে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। অভিযোগে জানা যায়, ওই শিক্ষার্থী ইংরেজি বিভাগের সান্ধ্য কোর্সের অধীনে গত ১৩ জানুয়ারি একটি কোর্সের পরীক্ষা দিতে বিভাগে আসেন। পরীক্ষা চলাকালীন তাদের সবার মোবাইল ফোন জমা রাখতে বলা হয়। এ কথা শুনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মোবাইলসহ ভ্যানিটি ব্যাগ সামনে রাখেন এবং পরীক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে বাসায় যাওয়ার পথে ব্যাগ থেকে মোবাইল ফোন বের করে দেখেন মোবাইলের সিম অদল-বদল করা এবং মেমোরি কার্ডের জায়গায় নষ্ট একটি মেমোরি কার্ড লাগানো। এ ছাড়া মোবাইলটির সম্পূর্ণ তথ্য মুছে দেওয়া। বিষয়টি জানার জন্য অভিযুক্ত শিক্ষককে ফোন করলে তিনি ফোন ধরেননি। তখন তিনি বুঝতে পারেন ওই শিক্ষকের অনেক অনৈতিক প্রস্তাবে সে রাজি না হওয়ার আগে ওই শিক্ষক কর্তৃক প্রেরিত সব তথ্য মোবাইল থেকে সুকৌশলে মুছে ফেলেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় ওই শিক্ষক বিভাগের নিজস্ব রুমে এমনকি কুমিলস্না শহরে তার নিজস্ব বাসায় যাওয়ার জন্য খুদে বার্তা প্রেরণ করতেন। এ ব্যাপারে শুক্রবার বিকালে অভিযোগকারী ওই শিক্ষার্থী মোবাইল ফোনে জানান, 'আমি এ বিষয়ের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সর্বোচ্চ বিচার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি করছি। আশা করছি, প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে।' অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক ও ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ আলী রেজওয়ান তালুকদার বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ যেহেতু দেওয়া হয়েছে তা প্রমাণ করার বিষয়। প্রমাণ করলে বিষয়টি বোঝা যাবে।' অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ইংরেজি বিভাগের সান্ধ্য কোর্সের প্রোগ্রাম পরিচালক ড. হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি অভিযোগ পেয়েছি। সান্ধ্য কোর্সের সাথে যারা আছেন সবাইকে নিয়ে বসে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।' এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের সাংবাদিকদের বলেন, 'ইংরেজি বিভাগের সান্ধ্য কোর্সে অধ্যয়নরত এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ পেয়েছি। উপাচার্যের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে আগামী ২৭ জানুয়ারি এ ভার্সিটির প্রথম সমাবর্তন। সমাবর্তনকে ঘিরে চলছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। এরই মধ্যে শিক্ষককের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগের খবর বিশ্ববিদ্যালয়সহ সর্বমহলে তোলপাড় চলছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযোগকারী ওই ছাত্রী জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপের বিষয় তাকে জানানো হয়নি। তারপরও তিনি আশাবাদী অবশ্যই তিনি ন্যায় বিচার পাবেন।