উত্তর-দক্ষিণ সিটি নির্বাচন

ঢাকার ভোটে খরচ এবার ৬০ কোটি টাকা

দুই সিটি ভাগ হওয়ার পর ২০১৫ সালে প্রথম নির্বাচনে পরিচালন ব্যয় ছিল ৯ কোটি ১২ লাখ আর আইনশৃঙ্খলাসহ মোট ব্যয় হয়েছিল ২০ কোটি টাকা

প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবার পরিচালন, আইনশৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণ মিলিয়ে প্রায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ের ফর্দ সাজিয়েছে নির্বাচন কমিশন, যা পাঁচ বছর আগের সিটি ভোটের তিনগুণ। অর্ধ কোটির বেশি ভোটারের এ মহানগরে আগামী ১ ফেব্রম্নয়ারি ভোট হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, দুই সিটির নির্বাচন পরিচালনায় প্রায় ১৯ কোটি টাকা, আইনশৃঙ্খলা খাতে 'পরিস্থিতি বিবেচনায়' ২২ থেকে ২৫ কোটি টাকা এবং প্রশিক্ষণ খাতে অন্তত ১৬ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ রয়েছে। ভোট শেষে সব ব্যয় সমন্বয় করে এবার খরচ দাঁড়াতে পারে ৬০ কোটি টাকা। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ভাগ হওয়ার পর ২০১৫ সালে প্রথম নির্বাচনে উত্তর ও দক্ষিণে পরিচালন ব্যয় ছিল ৯ কোটি ১২ লাখ টাকা। আর আইনশৃঙ্খলাসহ সব মিলিয়ে ব্যয় দাঁড়িয়েছিল ২০ কোটি টাকা। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, এবারই প্রথম পুরো ঢাকায় ইভিএমে ভোট হচ্ছে। সেজন্য প্রায় ৩৫ হাজার ইভিএম তৈরি রাখা, এ নিয়ে প্রশিক্ষণ, প্রচার ও উপকরণ সংগ্রহে ব্যয় হচ্ছে বেশ। এবার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের সম্মানী ভাতা গত নির্বাচনের চেয়ে দ্বিগুণ রয়েছে। অন্যান্য খাতেও খরচ বিভিন্ন মাত্রায় বেড়েছে। ৫০ হাজারের বেশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার ভাতা ও প্রশিক্ষণ; ভোট কেন্দ্রে সশস্ত্রবাহিনীর কারিগরি টিম; প্রায় ২৫ হাজার পুলিশ সদস্য, ১ হাজার এপিবিএন সদস্য ও ৩৫ হাজার আনসার সদস্য; বিজিবির্-যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বাজেট; নির্বাহী ও বিচারিক হাকিম; রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং পরিবহণ ও জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় রয়েছে এর মধ্যে। ইসির বাজেট শাখার উপসচিব এনামুল হক বলেন, উত্তর ও দক্ষিণ সিটির নির্বাচন পরিচালনায় যে ১৮.৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে, তার বড় একটি অংশ বরাদ্দ থাকবে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের জন্য। আর আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক বৈঠকের পর চাহিদা সাপেক্ষে এ খাতে বরাদ্দ চূড়ান্ত করা হবে। নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক নূরুজ্জামান তালুকদার জানান, ইভিএম নিয়ে এবার বড় আকারে প্রশিক্ষণ ও প্রচারের ব্যবস্থা হয়েছে। ১১ জানুয়ারি শুরু হওয়া এ প্রশিক্ষণ ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। সে জন্য ১৬ কোটি টাকা বাজেট ধরা হয়েছে। সম্ভাব্য ব্যয় (এ বরাদ্দ বাড়তে পারে) ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্দ প্রায় সাড়ে ১১ কোটি। নির্বাহী ও বিচারিক হাকিমদের জন্য ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। মনিহারি দ্রব্যের (ভোটে ব্যবহৃত খুচরা উপকরণ) জন্য ১ কোটি। জ্বালানি ও পরিবহণের জন্য ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার জন্য ২৫ লাখ টাকা। কারিগরি টিমের জন্য ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। প্রশিক্ষণ খাতে ব্যয় প্রায় ১৬ কোটি টাকা। আইনশৃঙ্খলা খাতে দুই সিটিতে ২২-২৫ কোটি টাকা। আইনশৃঙ্খলা সভা ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে ভোটের ১০ দিন আগে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক বৈঠক ডেকেছে নির্বাচন কমিশন। আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবন মিলনায়তনে ২২ জানুয়ারি এ বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনারও উপস্থিত থাকবেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, মহাপুলিশ পরিদর্শক, বিজিবি মহাপরিচালক,র্ যাব-আনসার ও ভিডিপি/ডিজিএফআই/এনএসআই মহাপরিচালক; এসবির অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক, দুই রিটার্নিং অফিসার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং সব সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনী এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা পরিকল্পনা, প্রতিকেন্দ্রের নিরাপত্তায় কতজন করে নিয়োজিত থাকবেন; সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার, আইনশৃঙ্খলা সমন্বয়সহ সার্বিক বিষয়ে ওই সভায় নির্দেশনা দেবে কমিশন।