চুরির অপবাদে কিশোরকে নির্যাতন

প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

লক্ষ্ণীপুর প্রতিনিধি
খুঁটিতে বেঁধে রাখা নিরব হোসেন
লক্ষ্ণীপুরে চুরির অপবাদ দিয়ে বিদু্যতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নিরব হোসেন নামে (১৬) এক কিশোরকে মারধর করাসহ ঝাড়ু ও জুতার মালা গলায় পরিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। বর্তমানে দোকান কর্মচারী ওই কিশোরকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ভিকটিমের শ্রমের টাকা না দিয়ে তাকে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীসহ তার পরিবার। এ ঘটনায় সোমবার ভুক্তভোগীর নানী বাদী হয়ে সদর থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এদিকে ঝাড়ু ও জুতার মালা গলায় পরিয়ে কিশোরকে এলাকায় ঘুরানোর ছবি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। গত শনিবার বিকালে দোকান থেকে টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে বিদু্যতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয় ১৬ বছর বয়সি এই কিশোরকে। শুধু তা-ই নয়, তার গলায় ঝাড়ু ও জুতার মালা পরিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়। সেই নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও তুলে ছেড়ে দেওয়া হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে লক্ষ্ণীপুর পৌর শহরের ২নং ওয়ার্ডের জালালিয়া মাদ্রাসাসংলগ্ন এলাকায়। শুধু তা-ই নয়, পুলিশের কাছ থেকে তাকে ছাড়িয়ে এনে দোকান মালিক শালিসি বৈঠকের আয়োজন করেন। এতে স্থানীয় মাতব্বররা ওই কিশোরকে দোষী সাব্যস্ত করে তার (কিশোরের) জরিমানা করেন ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু এতিম ওই কিশোরের দায়িত্ব নিতে রাজি হননি নানা ও নানী। এতেই হট্টগোল শুরু হয়ে আবারও মারধর করা হয় তাকে। রোববার রাত ৯টায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় লক্ষ্ণীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ভুক্তভোগী কিশোরকে। সোমবার সকালে ভুক্তভোগীর নানী আলেয়া বেগম থানায় অভিযোগ করেন। জানা যায়, ছয় মাস ধরে স্থানীয় রাশেদের চামড়ার দোকানে কাজ করতেন মৃত কিরন হোসেনের ছেলে নিরব হোসেন। এরই মধ্যে তার মাকেও হারান সে। দোকানে মাসিক শ্রমের টাকা পান না বলে অভিযোগ তার। তাই বাধ্য হয়ে মালিকের অগোচরে নিজের পাওনা টাকাই নেন বলে দাবি করেন ওই কিশোর। তবে দোকান মালিক বলছেন, চুরি করে তার মূলধন আত্মসাৎ করায় নিজেসহ এলাকাবাসী তাকে শাস্তি হিসেবে ঝাড়ু ও জুতার মালা পরিয়ে দেন।