গুরুদাসপুর ও টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ২

প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
নাটোরের গুরুদাসপুর এবং কক্সবাজারের টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধে দুজন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন হত্যা মামলার আসামি ও অপরজন রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন। আমাদের নাটোর প্রতিনিধি ও গুরুদাসপুর সংবাদদাতা জানান, নাটোরের গুরুদাসপুরের বৃদ্ধা মনোয়ারা বেগম হত্যাকান্ডের সপ্তাহখানেক পরই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে হানিফ শেখ নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ সময় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, একটি পাইপগান ও ৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। আহত দুই পুলিশ সদস্য হলেন- সহকারী উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম ও রুবেল হোসেন। নিহত হানিফ শেখ উপজেলার কালাকান্দার গ্রামের রুহুল শেখের ছেলে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলার পার গুরুদাসপুরের একটি কলাবাগানে এই ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশের দাবি, নিহত হানিফ শেষ গৃহবধূ মনোয়ারা বেগম হত্যার ভাড়াটে খুনি। নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ১৬ জানুয়ারি গুরুদাসপুরের পার গুরুদাসপুর গ্রামের অব. প্রাথমিক শিক্ষক হাতেম আলীর স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা হয়। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় অভিযুক্তদের শনাক্ত করে আসামি করা হয়। গুরুদাসপুর থানা পুলিশের একটি টিম গত ২৩ জানুয়ারি রাতে রাজধানী ঢাকার মেরুল বাড্ডা এলাকা থেকে আবু হানিফ শেখকে গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্য মতে বৃহস্পতিবার রাতে পার গুরুদাসপুর এলাকায় হত্যায় সহযোগীদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। তখন পার গুরুদাসপুর হতে কালাকান্দর সংযোগ সড়কের পাশে অবস্থিত কলাবাগানে অবস্থানরত অভিযুক্তরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় গ্রেপ্তারকৃত হানিফ শেখ পালানোর চেষ্টাকালে গুলিবিদ্ধ হন। অন্যরা সবাই পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি জানান, টেকনাফে বিজিবির সঙ্গে মাদক পাচারকারীদের গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এ সময় 'বন্দুকযুদ্ধে' এক রোহিঙ্গা নিহত হন। নিহত ব্যক্তি মাদকপাচারের সঙ্গে জড়িত বলে বিজিবির ভাষ্য। ঘটনাস্থল থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার পিস ইয়াবা এবং অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিজিবির দুই সদস্য আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদীমুড়াস্থ নাফনদী সীমান্ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিজিবি জানায়, মিয়ানমার থেকে ইয়াবার একটি বড় চালান হ্নীলা ইউনিয়ন জাদীমুড়াস্থ নাফনদী সীমান্ত এলাকা দিয়ে আসছে- এমন সংবাদ পেয়ে বিজিবি সদস্যরা সেখানে অবস্থান নেন। কিছুক্ষণ পর মাদক পাচারকারীরা বস্তা মাথায় করে যাওয়ার সময় তাদের চ্যালেঞ্জ করলে বিজিবি সদস্যদের ওপর গুলি চালায়। বিজিবি সদস্যরাও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালান। উভয় পক্ষের ৬-৭ মিনিট গোলাগুলি হয়। পরে মাদকপাচারকারী দলের কয়েকজন সদস্য কৌশলে কেওড়া বাগানের ঝোপের মধ্যে পালিয়ে যায়। একপর্যায়ে গোলাগুলি থেমে গেলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অজ্ঞাতনামা এক যুবককে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে নিহত ব্যক্তি উখিয়ার থাইংখালী রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা বলে জানালেও তার নাম বলতে পারেনি বিজিবি। এদিকে ঘটনাস্থল তলস্নাশি করে ৩ কোটি ৯০ লক্ষ টাকার ১ লাখ ৩০ হাজার পিস ইয়াবা, দেশীয় তৈরি ১টি এলজি অস্ত্র, ১টি কার্তুজ উদ্ধার করে বিজিবি। অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল ফয়সাল হাসান খান (পিএসসি) জানান, বিজিবির মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।