চলন্তিকা বস্তিতে আগুন

দগ্ধ পারভীনকে বাঁচানো গেল না

প্রকাশ | ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
আগুনে পুড়ে যাওয়া শরীরের অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে প্রায় ২৭ ঘণ্টা লড়াই করেছেন পারভীন বেগম। শুক্রবার দুপুরে একবার উন্মাদের মতো হাসপাতাল থেকে ছুটে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করেছেন। তাকে ধরে এনে আবারও দেওয়া হয়েছে চিকিৎসা। তবে সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়ে গেছে। জুড়িয়েছে তার সব জ্বালা। গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা গেছেন ৩৫ বছর বয়সি পারভীন। শুক্রবার ভোরে রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর এলাকার চলন্তিকা বস্তিতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দগ্ধ হয়েছিলেন তিনি। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ৭টার দিকে তার মৃতু্য হয়। শুক্রবার সকালে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন। ঢামেক সূত্র জানায়, শ্বাসনালীসহ শরীরের ৯০ ভাগ পুড়ে যাওয়ায় শুরু থেকেই পারভীন ছিলেন সংকটাপন্ন। চিকিৎসকরা তাকে সারিয়ে তোলার সব রকম চেষ্টা করেছেন। তবে শুক্রবার রাতে তার অবস্থায় আরও অবনতি হয়। একপর্যায়ে গতকাল সকালে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, চলন্তিকা বস্তিতে একাই থাকতেন পারভীন। এখন পর্যন্ত তার কোনো স্বজনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। তিনি গৃহকর্মী হিসেবে ওই এলাকার বিভিন্ন বাসায় কাজ করতেন। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনায় কথা বলারও সুযোগ মেলেনি। এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় পারভীনকে দেখতে হাসপাতালে যান লোকমান হোসেন নামের এক ব্যক্তি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পারভীন তার বাসাসহ আরও কয়েকটি বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি অবিবাহিত ছিলেন। এর বেশি কিছু তার জানা নেই। শুক্রবার ভোর ৪টা ৯ মিনিটে চলন্তিকা বস্তিতে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর একে একে ১৫টি ইউনিট সেখানে যায়। সকাল পৌনে ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে পুরোপুরি নেভাতে আরও প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। এতে ৩৭৭টি কাঁচা বসতঘর পুড়ে যায়। দগ্ধ হন দুজন। তাদের মধ্যে শহিদুল ইসলাম নামে এক তরুণ চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর আগে গত বছরের ১৬ আগস্ট এই বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পুড়েছিল প্রায় দেড় হাজার ঘর। ফায়ার সার্ভিসের ২৪টি ইউনিট সেদিন আগুন নেভানোর কাজ করে। বারবার আগুন লাগার ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস।