রাজশাহীতে পুলিশের ভুলে কারাগারে নিরপরাধ যুবক

প্রকাশ | ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

রাজশাহী অফিস
শাহীন
রাজশাহীতে যুবলীগ নেতা সানোয়ার হোসেন রাসেল হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতরা এখনো অধরা। হত্যার সঙ্গে জড়িত শাহীনকে পুলিশ এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে নামের মিল থাকায় নিরপরাধ শাহীনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। এরপর থেকেই নিরপরাধ শাহীন জেলে। মামলার বাদী মনোয়ার হোসেন রনি বলেন, 'আমরা মামলায় যাদের নাম দিয়েছি, তাদের মধ্যে জেলে থাকা শাহীন নেই। আমরা পুলিশকে বলেছি, ওই শাহীন ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। কিন্তু পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়ে তার নাম দিয়ে দিয়েছে।' গত ১৩ নভেম্বর পশ্চিম রেলের সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের টেন্ডারবাজি কেন্দ্র করে রাসেলের ভাই আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন রাজার ওপর হামলা হয়। তাকে বাঁচাতে গেলে ছুরির আঘাতে জখম হন রাসেল। পরে তার মৃতু্য হয়। ওই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন শিরোইল কলোনি এলাকার ডা. নাসিরের ছেলে শাহীন আহমেদ শাহীন। কিন্তু পুলিশ ওইদিন সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করে একই এলাকার নূর মুহাম্মদ সরদারের ছেলে শাহীনুর রহমান শাহীনকে (২২)। বাদীর বক্তব্য অনুযায়ী ঘটনার সঙ্গে জড়িত শাহীনকে পুলিশ এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি। কিন্তু শুধু নামের মিল থাকার কারণে নিরপরাধ শাহীন এখন জেলে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চন্দ্রিমা থানার উপ-পরিদর্শক রাজু আহমেদ বলেন, মামলাটির তদন্ত কাজ চলছে। তদন্ত শেষ না হওয়ায় এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারছি না। নিরপরাধ শাহীন জেলে কেন জানতে চাইলে এ বিষয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে বলেন। শাহীনুর রহমানের বাবা নূর মুহাম্মদ সরদার জানান, পুলিশ কারও কোনো কথা না শুনেই পাড়ার মোড়ে যাকে পেয়েছে তাকে তুলে নিয়ে গেছে। এরপর হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে। তাদের মধ্যে তার ছেলে শাহীনও ছিল। শাহীন ঘটনার দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থান করছিল। তার প্রমাণও দেয়া হয়েছে। এরপরও পুলিশ তাকে হত্যা মামলায় আসামি করে কারাগারে পাঠিয়েছে। এদিকে, মূল হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে নগরীজুড়ে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। ওই পোস্টারে এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত দাবি করে ৯ জনের ছবি দেওয়া হয়েছে। ওই ৯ জনের মধ্যে জেলে থাকা শাহীনের ছবি নেই। আছে প্রকৃত অপরাধী শাহীনের ছবি। নিহত রাসেলের পরিবারের পক্ষ থেকে মানববন্ধন করা হয়েছে। সেখানেও হত্যাকারী হিসেবে ডা. নাসিরের ছেলে শাহীন আহমেদের ছবি ব্যানারে ছিল। মামলায় শাহীনুর আলমের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোকলেসুর রহমান স্বপন জানান, আদালতেও তিনি বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে অপরাধী শাহীন কে- এ নিয়ে কোনো প্রতিবেদন না পাঠানোয় মুক্তি মিলছে না নিরপরাধ শাহীনের।