সাক্ষাৎকার

নারীবান্ধব নগর গড়তে চান আবদুর রহমান

ডিএসসিসির মেয়রপ্রার্থী

প্রকাশ | ২৭ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ফয়সাল খান
আবদুর রহমান
নারীবান্ধব নগর গড়ার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আসন্ন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মেয়রপ্রর্থী আবদুর রহমান। নির্বাচিত হলে নগরীতে নারীদের নিরাপত্তা, নিরাপদ শিক্ষা ও গণপরিবহণ ব্যবস্থায় নারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা নিশ্চিত করবেন তিনি। এ ছাড়া পরিবেশ, বায়ু ও শব্দদূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের সর্বস্তরে স্বচ্ছতা, জবাবদিহতা ও আমানতদারিতার প্রতিশ্রম্নতি দেন তিনি। রোববার যায়যায়দিনের সঙ্গে একান্ত এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। আগের মেয়র ও প্রশাসকদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৪৯ বছরে ঢাকা শহরে অনেক চেয়ারম্যান, মেয়র ও প্রশাসকরা দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু বাসযোগ্য ঢাকা গড়তে পারেননি। নাগরিকদের প্রশ্ন, প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকার বাজেট থাকলেও কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি কেন। ঢাকার দুরবস্থার জন্য কারা দায়ী, তা চিহ্নিত হয়ে গেছে। অতীতে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তাই নগরবাসী সৎ, দক্ষ মেয়র পেতে উন্মুখ হয়ে আছে। মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য মেয়রপ্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচিত হলে স্বচ্ছতার সঙ্গে জন-মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবেন। তিনি বলেন, এই শহরে নারীর নিরাপত্তা নেই। নারীদের অধিকার নেই। বিশেষ করে পাবলিক টয়লেট সংকটে চরম ভোগান্তির শিকার হন নারীরা। নির্বাচিত হলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সব এলাকায় যৌতুকমুক্ত বিয়ে নিশ্চিত করা হবে। নারী অপহরণ, ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানীর মতো অপরাধগুলো কঠোর হস্তে দমন করা হবে। নারীদের সমস্যাগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে সুন্দর শহর গড়ে তুলব। শিশুদের জন্য খেলার মাঠ, হাঁটাচলার উন্মুক্ত জায়গা তৈরি, কার ও প্রতিবন্ধীদের চলাচল উপযোগী ফুটপাত ও সড়ক নির্মাণসহ ঢাকা দক্ষিণকে পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তুলবেন। ঢাকার বিভিন্ন সমস্যার কথা উলেস্নখ করে আবদুর রহমান বলেন, সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে আগামী প্রজন্ম হুমকির মুখে পড়বে। জনজীবনে নেমে আসবে ভয়াবহ বিপর্যয়। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো মহামারি ছড়াতেই থাকবে। প্রশাসনিক কাজে স্বচ্ছতা না আসলে এসব দুর্যোগ থেকে বাঁচার কোনো উপায় নেই। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে ধর্ম-বর্ণ ও দলমত নির্বিশেষে সবাই হাতপাখা মার্কায় ভোট দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। নগরীর উন্নয়নে ২৯ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন উলেস্নখ করে আবদুর রহমান আরও বলেন, আমরা মানুষকে যে প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছি, নির্বাচিত হলে তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। কোনো মন ভোলানো আশ্বাস দেইনি। জনগণের ভোটে মেয়র হলে ভেজালমুক্ত খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও ইনসাফপূর্ণ বাজারব্যবস্থা গড়ে তুলব। নগর উন্নয়নে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করব। সামাজিক ন্যায় বিচার নিশ্চিত করব। মাদক, ইভটিজিং, অপসংস্কৃতির গ্রাস থেকে রক্ষার জন্য যুগোপযোগী কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। শ্রমিকদের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হবে। সংখ্যালঘুদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, জলাবদ্ধতা নিরসন, হকার সমস্যার স্থায়ী সমাধান, সভা-সমাবেশের জন্য আলাদা ১০টি মাঠ বরাদ্দ রাখা, হোল্ডিং ট্যাক্স ৩০ শতাংশ কমানো ও লাইসেন্স ফি কমানো হবে। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তিনি বলেন, ইভিএম দিয়ে আসলে কি হবে, তা পরিষ্কার নয়। এতে টেকনিক্যাল অনেক সমস্যা রয়েছে। একজন নির্বাচন কমিশনারই এই পদ্ধতি নিয়ে সন্তুষ্ট নন। অতীতেও এই কমিশন নির্বাচন সুষ্ঠু করেননি। গত সংসদ নির্বাচনে রাতেই ভোট করেছে। বর্তমান কমিশনের সামনে সুষ্ঠু নির্বাচন দেয়ার এটিই শেষ সুযোগ। বারবার বিতর্কিত নির্বাচন দিলে জনগণ আর সহ্য করবে না বলে জানান তিনি। পুরান ঢাকার লালবাগ এলাকার বাসিন্দা আবদুর রহমান চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির শিল্প ও বাণিজ্য-বিষয়ক সম্পাদক। এর আগে গত সংসদ নির্বাচনে ঢাকা সাত আসন থেকে হাতপাখা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।