আইওএমের সহায়তায় লিবিয়া থেকে দেশে ১৪৮ বাংলাদেশি

প্রকাশ | ৩০ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
লিবিয়া থেকে ১৪৮ জন বাংলাদেশি অভিবাসী দেশে ফিরেছেন। দেশে ফিরতে তাদের সাহায্য করেছে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম। সংস্থাটি ভলান্টারি হিউম্যানিটারিয়ান রিটার্ন (ভিএইচআর) কর্মসূচির মাধ্যমে ওই বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনে। ফিরে আসা বাংলাদেশিদের মধ্যে যুদ্ধে আহত, সমুদ্র পথে ইউরোপ যেতে ব্যর্থ এবং লিবিয়ার জেলে বন্দি থাকা অভিবাসীরা রয়েছেন। বুধবার দুপুরে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আইওএমের ভাড়া করা একটি বিশেষ পেস্ননে তারা দেশে ফেরেন। এর আগে মঙ্গলবার লিবিয়ার মিসারত বিমানবন্দর থেকে পেস্ননটি রওয়ানা দেয়। লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুরের মো. আকবর। তিনি গ্রামের দালাল ধরে চার বছর আগে লিবিয়ায় গিয়েছিলেন পরিবারের ভাগ্য বদলাতে। বেতন ছিল খুবই সামান্য। কোনোমতে নিজে চলতে পারতেন। যে কারখনায় কাজ করতেন হঠাৎ সেখানে বিমান হামলায় ৪ বাংলাদেশিসহ ১৩ জন মারা যায়। আকবর বলেন, বিমান হামলার পর মনে হলো অল্পের জন্য জীবনটা বাঁচল। সিদ্ধান্ত নিলাম দেশে ফিরে আসব। এরপর লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস হয়ে আইওএমের সঙ্গে যোগাযোগ করি। দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করি। আইওএম বাংলাদেশের চিফ অব মিশন গিওগি গিগাওরি বলেন, 'লিবিয়ার প্রতিকূল অবস্থা অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশিদের সুরক্ষা ও সহায়তা দিতে সর্বদা আমরা তৎপর। যারা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে তাদের তাৎক্ষণিক সব ধরনের সহযোগিতা নিশ্চিত করছি আমরা। একইসঙ্গে ফিরে আসা অভিবাসীদের দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতাও করব আমরা।' আইওএম জানায়, দেশে আসা ৮ জন শারীরিকভাবে অসুস্থ। অসুস্থ ব্যক্তিদের নিবিড়ভাবে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়েছে এবং চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তির জন্য সহায়তা করা হয়েছে। এছাড়া আইওএম লিবিয়া থেকে ফিরে আসা অভিবাসীদের মানসিক ও সামাজিক সেবা, তৎক্ষণিক সেবা, ফিরে আসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং বাংলাদেশে সরকারের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সহায়তা করেছে। ঢাকায় পৌঁছানোর পর বিমানবন্দরে আইওএম বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে বাড়ি ফিরতে প্রত্যেককে ৪ হাজার ৭৩০ টাকা, খাবার, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও মানসিক সেবা দেওয়া হয়েছে। আগামীতে এই অভিবাসীদের অর্থনৈতিক সহযোগিতাও করবে আইওএম, যেন তারা বাংলাদেশে আয় করে জীবন চালাতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে বাংলদেশ সরকার ও লিবিয়া কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৪০০-এর বেশি বাংলাদেশিদের দেশে ফিরতে সহযোগিতা করছে আইওএম। বিশ্বব্যাপী ভিএইচআর প্রোগ্রামটির সহযোগিতায় ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসীদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ও সহায়তা দিয়ে থাকে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)।