ডিএসসিসি ওয়ার্ড-২৬

মডেল ওয়ার্ড গড়তে চান মানিক

প্রকাশ | ৩০ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
হাসিবুর রহমান মানিক
যাযাদি রিপোর্ট আজিমপুর, নীলক্ষেত ও লালবাগের (একাংশ) নিয়ে গঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২৬ নং ওয়ার্ড। এ ওয়ার্ডে ক্ষমতাসীন দলের সমর্থন পেয়ে 'রেডিও' মার্কা নিয়ে লড়ছেন বর্তমান কাউন্সিলর আলহাজ হাসিবুর রহমান মানিক। ২০১৫ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করায় এবং এলাকায় উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় এবার তাকেই বেছে নিয়েছেন দলের হাইকমান্ড। দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হলে তিনি চলমান উন্নয়ন প্রকল্প শেষ করে মডেল ওয়ার্ড গড়তে চান বলে তার কর্মী সমার্থকরা দাবি করেছেন। জানা গেছে, ঢাকা ২ সিটি কর্পোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে তরুণ কাউন্সিলর মানিক। বর্তমান তিনি এই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এর আগে তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও লালবাগ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ছাত্র অবস্থাতেই তিনি এলাকার তরুণদের নিজের প্রতিভায় কাছে টেনে নেন। পাশাপাশি এলাকার মুরুব্বীদেরকে নিজের অভিভাবক হিসেবে মান্য করে চলেন। গাজীপুর সদরের দক্ষিণখানে বাড়ি হলেও তিনি লেখাপড়া করেছেন আজিমপুর এতিমখানায়। এ কারণে এলাকার সবাই মানিকের পাশে এসে দাঁড়ান। এবং ২০১৫ নির্বাচনে তিনি এলাকায় স্বতন্ত্র পার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন। কাউন্সিলর হওয়ার পর মানিককে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি দলের নেতাকর্মীদের আরো কাছে টেনে নেন। পাশাপাশি দলমত নির্বিশেষে সবার বিপদে তাকে পাশে পাওয়া গেছে বলে তার কর্মী-সমার্থকরা দাবি করেছেন। এ কারণে কল্যাণমুখী এই কাউন্সিলরকে এলাকার গরিব-দুঃখীরা ভালোবেসে ডাকেন 'জনতার কমিশনার'। কাউন্সিলর মানিক বলেন, 'লালবাগ ও আজিমপুর এলাকার বাসিন্দা ঐতিহ্যগতভাবেই ইসলামি ভাব গাম্ভীর্যের মধ্যে তাদের জীবন-যাপন করে যাচ্ছেন। আলস্নাহর কাছে আমি শুকরিয়া আদায় করছি যে, আমি এই ওয়ার্ডের প্রতিনিধিত্ব করতে পারছি। কাউন্সিলর থাকা অবস্থাতেই আমি এলাকার অনেক উন্নয়ন করেছি। রাস্তাঘাট নতুন করে তৈরি করেছি। ড্রেনেজ ব্যবস্থাও করেছি। মাদকের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান জিরো টলারেন্স। এলাকায় মাদকসেবীদের আড্ডা গুঁড়িয়ে দিয়েছি। সর্বপ্রথম ২৬ নং ওয়ার্ডকে সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসি। তবে সব সমস্যার সমাধান একবারেই নির্মূল করা সম্ভব নয়। দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হলে বাকি সমস্যার সমাধান করে ২৬ নং ওয়ার্ডকে মডেল হিসেবে দাঁড় করাতে চাই। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মাদক এবং ইভটিজিং বন্ধ কাউন্সিলর মানিক সবসময় জিরো টলারেন্স নীতিতে এলাকার সর্বস্তরের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এ কারণে এখন গভীর রাতেও নারী-পুরুষ নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে। যানজট নিরসনে রাস্তায় বসিয়েছেন নির্দেশক বোর্ড। জানা গেছে, ২০১৫ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর আজিমপুর বাইলেনের উন্নয়ন ও নর্দমা নির্মাণ হোল্ডিং নং ৩২/২ হতে হোল্ডিং নং ১৬৬ পর্যন্ত কাজ সম্পূর্ণ করেছেন। এছাড়া কোল্ড রি- সাইকিং পদ্ধতিতে জহির রায়হান রোড (পলাশী মোড় হতে নীলক্ষেত মোড় পর্যন্ত) সংস্করণ করেন। আজিমপুর ম্যাটারেনিটিং সম্মুখে ফুট ওভার ব্রিজ নির্মাণ করেন। ডিজি লাইজড এল ই ডি বাতি স্থাপন করেছেন। রাস্তার ময়লা ফেলানো জন্য ছোট ছোট বিন বসানো, আজিমপুর বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন পুরুষ ও মহিলাদের জন্য দুটি আলাদা টয়লেট (ওয়াটার এইড-এর সহায়তায় ) স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক সুয়ারেজ লাইনের নির্মাণ, আজিমপুর রোড দায়রা শরীফ হতে ছাপড়া মসজিদ রোড ও চায়না বিল্ডিং গলি এবং ঢাকেশ্বরী বাইলেন নির্মাণ করেছেন। চায়না বিল্ডিং গলির রাস্তা ও নর্দমা উন্নয়ন কাজ হোল্ডিং নং ৪৪/ সি ১ হতে হোল্ডিং নং ১৫৬ হয়ে ১২২/১ পর্যন্ত এবং হোল্ডিং নং ১৪৬ /১ হয়ে ৫ নং গেইট পর্যন্ত উন্নয়ন শেষ পর্যায়ে। ঢাকেশ্বরী রোড, লালবাগ চৌরাস্তা হইতে ঢাকেশ্বরী মন্দির ও গৌর এ শহীদ মাজার হতে মীম কমিউনিটি সেন্টার পর্যন্ত রাস্তা ও নর্দমার কাজ চলমান। রসুলবাগ লেন বাইলেন, ১৮৬ লালবাগ হতে ২০৯ ১৮৮ পর্যন্ত গলি, লালবাগ চৌরাস্তা থেকে লালবাগ কেলস্নার ১ নং গেইট হয়ে হোল্ডিং নং ৭০ পর্যন্ত নর্দমা ও রাস্তার উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া আজিমপুর কবরস্থানে দোতলা বিশিষ্ট মেয়র মোহাম্মদ হানিফ জামে মসজিদ ও পুরাতন কবরস্থানে দ্বিতীয় তলাবিশিষ্ট গেইট হাউজিং নির্মাণ করেন। জানতে চাইলে মানিক বলেন, 'এলাকায় দুটি পার্ক রয়েছে। আগে সেখানে মাদকের আখড়া ছিল। আমি কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর শহীদ আবদুল আলীম খেলার মাঠ ও রসুলবাগ পার্ক সংস্কার ও মাদকসেবীদের উচ্ছেদের পর সেখানে এখন সব বয়সের লোকজন সময় কাটান। বিশেষ করে শিশু-কিশোরেরা সেখানে খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকেন। পাশাপাশি উঠতি বয়সি তরুণদের জন্য গনী সরদার কমিউনিটি সংলগ্ন ব্যায়ামাগার এবং আজিমপুর শরীর চর্চা কেন্দ্রকে আরো আধুনিক করা হয়েছে। এবার জনগণ আমাকে নির্বাচিত করলে আমি আমার চলমান কাজগুলো শেষ করে মডেল ওয়ার্ড গড়ে রাজধানীবাসিকে দেখাতে চাই ইচ্ছা থাকলে সবই সম্ভব। পুরান ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এই ওয়ার্ডে মানিকের বিপরীতে বিএনপি সমর্থনে নির্বাচন করছেন মীর আশরাফ আলী আজম। এছাড়া বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে আওয়ামী লীগের হাসিবউদ্দিন রকি ও বিএনপির বদিউল আলম সুইট। তারাও নিজেদের মতো প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।