বেসিসের তথ্য

সফটওয়্যার আমদানি ৪ বছরে বেড়েছে ৬ গুণ

প্রকাশ | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০ | আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:১০

যাযাদি রিপোর্ট
বৃহস্পতিবার বেসিস সফটএক্সপোতে প্রদর্শিত রোবট দেখছেন দর্শনার্থীরা -যাযাদি

বৈদেশিক আয়ের ক্ষেত্রে নীতি নির্ধারক পর্যায়ে সফটওয়্যার রপ্তানিকে বড় একটি খাত হিসেবে দেখা হচ্ছে অনেক দিন থেকেই। সফটওয়্যার রপ্তানির পরিমাণও বছর বছর বাড়ছে। তবে একইসঙ্গে পালস্না দিয়ে বাড়ছে সফটওয়্যার আমদানিও। মাত্র চার বছরের ব্যবধানেই দেশে সফটওয়্যারের আমদানি বেড়েছে ছয় গুণ! ২০১৬ সালে যেখানে ২১ লাখ ডলারের সফটওয়্যার আমদানি হয়েছিল, সর্বশেষ ২০১৯ সালে তা সোয়া কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। সংশ্লিষ্টরা উদ্বেগ জানিয়ে বলছেন, দেশীয় সফটওয়্যার শিল্পের উন্নতির পথে এ পরিসংখ্যান শঙ্কার কারণ। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে দেশে ২১ লাখ ৫৯ হাজার ৮৮৪ ডলার সমমূল্যের সফটওয়্যার আমদানি হয়েছিল। পরের বছর আমদানি বেড়ে দাঁড়ায় ৩২ লাখ ৩২ হাজার ৯২ ডলারে। ২০১৮ সালে এর পরিমাণ ছিল ৫৩ লাখ ১৬ হাজার ৩৯০ ডলার। আর সর্বশেষ ২০১৯ সালে সফটওয়্যার আমদানির পরিমাণ ছিল আগের বছরের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি-১ কোটি ৩০ লাখ ২ হাজার ৮৫৩ ডলার। বেসিসের এই তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের পর চার বছরে দেশে সফটওয়্যার আমদানির পরিমাণ বেড়েছে ৬ গুণ। সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, এ বছরে সফটওয়্যারের আমদানি আগের বছরের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে যাবে। জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি বিপদে না পড়লে বিদেশি সফটওয়্যার ব্যবহারের পক্ষে নই। আমি মনে করি, এক্ষেত্রে সঠিকভাবে নীতি নির্ধারণ করা হয়নি। এটা অবশ্যই প্রতিরোধ করা উচিত। তিনি বলেন, সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে প্রথমে দেশীয় বাজারকে বড় করতে হবে। দেশে উৎপাদিত সফটওয়্যার যদি দেশের মানুষই ব্যবহার না করে, তাহলে বহির্বিশ্বের ক্রেতারা কেন তা কিনবে? আমাদের ছেলে-মেয়েদের সক্ষমতা আছে, সুযোগ পেলে তারা যেকোনো সফটওয়্যারকে রিপেস্নস করতে পারবে। দেশীয় সফটওয়্যার ব্যবহার না করলে উৎপাদনের সক্ষমতাও বাড়বে না। আর সার্বিকভাবে সফটওয়্যার আমদানি বেড়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে উদ্বেগের বিষয়। দেশ ডিজিটালাইজেশনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলেই সফটওয়্যারের আমদানি বেড়েছে বলে মনে করেন বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'দেশ দ্রম্নত ডিজিটালাইজেশনের দিকে অগ্রসর হওয়ায় দেশে সফটওয়্যার আমদানি বাড়ছে। দ্রম্নত ডিজিটালাইজেশনের পক্ষে এটি একটি ভালো লক্ষণ। দেশে যে সফটওয়্যার তৈরি হচ্ছে, সেগুলোর আমদানি কিন্তু কমছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে সফটওয়্যার ও আইটি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ২ হাজার। আর খাতটিতে কর্মরত রয়েছেন প্রায় ১০ লাখ মানুষ। তা সত্ত্বেও দেশের সফটওয়্যার খাত এখনো বিদেশি সফটওয়্যারের নির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। অপারেটিং ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সফটওয়্যারে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো বিদেশনির্ভর। তবে সফটওয়্যার ব্যবহারে ব্যাংকিং খাত এক সময় পুরোটা বিদেশনির্ভর হলেও এখন তা কেটেছে। ব্যাংকগুলোতে বেড়েছে কোর ব্যাংকিংসহ দেশীয় ছোটখাটো সফটওয়্যারের ব্যবহার। তারপরও সফটওয়্যারের খাতের আমদানি ব্যয় বেড়ে চলছে।