গাজীপুরে গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃতু্য

প্রকাশ | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
গাজীপুর প্রতিনিধি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভাওয়াল গাজীপুর এলাকায় গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃতু্যর খবর পাওয়া গেছে। তবে নিহতের স্বজনদের দাবি তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত ইয়াসমিন বেগম (৪০), ভাওয়াল গাজীপুর গ্রামের আব্দুল হাইয়ের স্ত্রী। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারের পর অসুস্থজনিত কারণে ওই গৃহবধূ মারা গেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। নিহতের ছেলে আরাফাত রহমান জিসান বলেন, তার বাবা আব্দুল হাইকে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার করতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মহানগর ডিবি পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক নুরে আলমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাদের বাড়িতে যায়। এ সময় পুলিশ সদস্যরা তার বাবাকে না পেয়ে কলাপসিবল গেট ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। পরে ডিবির সদস্যরা তার মা ইয়াসমিনকে মারধর করে এবং আটক করে নিয়ে যায়। জিসান আরও বলেন, পরে তার মার মোবাইলে ফোন দিলে ডিবির সদস্যরা তাকে ডিবি অফিসে যেতে বলে। কিছুক্ষণ পর পুলিশ তাকে ডিবি অফিসে না গিয়ে হাসপাতালে যেতে বলে। হাসপাতালে গেলে পুলিশ তাকে ভেতরে যেতে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে তারা জানায়, তার মা মারা গেছেন। তবে তার মা একজন হৃদরোগী ছিলেন জানিয়েছেন জিসান। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মনজুর রহমান পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিহতের ভাওয়াল গাজীপুর এলাকার বাড়িতে মাদক বেচা-কেনা হচ্ছে এমন খবরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাদের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। পরে মাদক মামলার আসামি ইয়াসমিনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার হেফাজত থেকে ১০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। এসময় তার মাদক ব্যবসায়ী স্বামী পালিয়ে যায়। গ্রেপ্তারের পর ইয়াসমিনকে গোয়েন্দা অফিসে নিলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ইয়াসমিনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। তাকে ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতিকালে ইয়াসমিন মারা যান। ইয়াসমিন ও তার স্বামী আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ১০টা ১০ মিনিটে ইয়াসমিনকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এসময় তার বুকে ব্যথা ও প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট ছিল। পরে তার ইসিজিও করা হয়। লক্ষণ থেকে প্রাথমিকভাবে বুঝা গেছে তিনি হার্ট অ্যাটাক করেছেন। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেয়া হয়। এক পর্যায়ে রাত ১১টা ২০ মিনিটে তিনি মারা যান। হার্ট অ্যাটাকে তিনি মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছে। নিহতের শরীরে বাহ্যিকভাবে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।