শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
যাত্রী কল্যাণের প্রতিবেদন

গণপরিবহণে এক বছরে যৌন নির্যাতনের শিকার ৫৯ নারী

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০
গণপরিবহণে কয়েকজন নারী যাত্রী -ফাইল ছবি

২০১৯ সালে গণপরিবহণে ৫২ ঘটনায় ৫৯ নারী ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। দেশের সড়ক, রেল এবং নৌপথে এসব ঘটনা ঘটেছে।

সোমবার বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালে দেশের সড়ক পথে মোট ৪৪টি, রেলপথে চারটি ও নৌপথে চারটি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার মধ্যে ১৬টি ধর্ষণ, ১২টি গণধর্ষণ, ৯টি ধর্ষণের চেষ্টা, ১৫টি যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ৪৪টি মামলা হয়েছে এবং ৯৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এছাড়া গণপরিবহণে যাতায়াতকালে নারীরা অসম্মানজনক আচরণেরও শিকার হচ্ছে। শুধুমাত্র পরিবহণ শ্রমিক, চালক, হেলপার নয় কখনও কখনও সহগামী পুরুষ যাত্রী দ্বারাও এ ধরনের যৌন সহিংসতার শিকার হতে হয় নারীদের।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এর আগে ২০১৭ সালে গণপরিবহণে চাঞ্চল্যকর রূপা গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দেশবাসী ফুঁসে উঠলে জনগণের তীব্র প্রতিবাদের কারণে স্বল্পতম সময়ে এ ঘটনার বিচার সম্পন্ন হয়। চার পরিবহণ শ্রমিককে ফাঁসি ও একজনকে সাত বছরের কারাদন্ড দেওয়া হলে তৎসময়ে এ ধরনের ঘটনা কিছুটা কমে আসে। তবে বর্তমানে নিপীড়নকারী, ধর্ষক, হত্যাকারীদের মামলা, গ্রেপ্তার ও বিচারের দীর্ঘসূত্রতায় এ ধরনের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, গত এক বছরে এ পরিমাণ সংবাদপত্রে প্রকাশিত ঘটনা শুধুমাত্র প্রতীকী চিত্র বহন করে। প্রকৃতপক্ষে ঘটনার ভয়াবহতা অনেক বেশি। রক্ষণশীল সমাজ হিসেবে বাংলাদেশের নারীরা লোকলজ্জা ও সামাজিক মর্যাদার কথা চিন্তা করে মামলা করে না। তাই হয়রানি এবং বিচারের দীর্ঘসূত্রতায় অসংখ্য ঘটনা চাপা পড়ে যায়।

গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের ২ আগস্ট রাতে যশোর থেকে কমিউটার ট্রেনে খুলনায় ফেরার পথে ফুলতলা রেলস্টেশনে নামলে কর্তব্যরত খুলনার জিআরপি পুলিশ মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে এক নারী যাত্রীকে আটক করে। পরে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), দারোগাসহ পাঁচজন পুলিশ মিলে রাতভর গণধর্ষণ শেষে পাঁচ বোতল ফেনসিডিল দিয়ে কোর্টে চালান করে দেয়। আদালতে ভয়াবহ এ গণধর্ষণের ঘটনার বর্ণনা দিলে ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। এতে গণধর্ষণের ঘটনা প্রমাণিত হলেও পরবর্তীতে মামলাটি পিবিআইয়ের তদন্তে অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশকে খালাস দেওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ঘটনার জুডিশিয়ালি তদন্তের মাধ্যমে পুনরায় তদন্ত করে অপরাধীদের দ্রম্নত আইনের আওতায় আনা ও তাকে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির।

বিজ্ঞপ্তিতে গণপরিবহণে নারী নির্যাতন বন্ধে বেশকিছু সুপারিশমালা তুলে ধরা হয়।

সুপারিশগুলো হলো- গণপরিবহণে নারী নির্যাতন বন্ধে যাত্রীকল্যাণ সমিতির সুপারিশমালা

১. গণপরিবহণে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা।

২. চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারের আলাদা আলাদা নেইম পেস্নটসহ পোশাক বাধ্যতামূলক করা।

৩. চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারের নিয়োগপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র ও ছবি নিয়ে ডাটাবেইজ তৈরি করা।

৪. গাড়ির ভিতরে নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের হটলাইন নাম্বার, ফোন নম্বর ও গাড়ির নম্বর লাগানোর ব্যবস্থা করা।

৫. গণপরিবহণের সংখ্যা বাড়ানো।

৬. বাস মিনিবাসে নারীর জন্য সংরক্ষিত আসন দরজার পাশে রাখা।

৭. গণপরিবহণে অস্বচ্ছ ও বিজ্ঞাপনে মোড়ানো কাচের ব্যবহার বন্ধ করা।

৮. গণপরিবহণে যৌন সহিংসতার মামলা, গ্রেপ্তার ও বিচার দ্রম্নত শেষ করা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<89978 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1