সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর না করার ইঙ্গিত প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর না করার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে 'রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবে রূপায়ণ : বাংলাদেশের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১' এর অনুমোদন দেওয়ার সময় মন্ত্রী ও সচিবদের সঙ্গে আলোচনায় এ ইঙ্গিত দেন প্রধানমন্ত্রী। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এ আলোচনা হয়। এরপর সাংবাদিকদের সামনে আলোচনার সারবস্তু তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ২০ বছরব্যাপী ওই রূপকল্প তৈরি করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ। সংবাদকর্মীদের উদ্দেশ্যে শামসুল আলম বলেন, 'সোনাদিয়া দ্বীপে জীববৈচিত্র্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ। সেজন্য গভীর সমুদ্রবন্দর করলে সেটি বাধাগ্রস্ত হতে পারে; বাস্তুতন্ত্রে, ইকোলজিতে। সেজন্য সেখানে পর্যটন কী গড়ে তোলা হবে, সমুদ্রবন্দর অন্যত্র গড়ে তোলা হবে- এরকম একটা ধারণা উনি (প্রধানমন্ত্রী) আমাদের দিলেন।' ব্রিফিংয়ের শেষের দিকে এ বিষয়টি পরিষ্কার হওয়ার জন্য পরিকল্পনামন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়। তখন এম এ মান্নান বলেন, 'সেখানে সমুদ্রবন্দর থেকে সরে আসব, বিষয়টা এরকম না। এখানে আলোচনা হয়েছে যে, সোনাদিয়া সুন্দর জায়গা। এর বৈচিত্র্য রক্ষা করা হোক। গভীর সমুদ্রবন্দর হবে নাকি অগভীর হবে, না পর্যটন হবে- উই উইল ডিসাইড ইন ফিউচার (ভবিষ্যতে আমরা সিদ্ধান্ত নেব)। মূল কথা হলো, সোনাদিয়াকে অক্ষত রাখা হবে।' সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসেই কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ঘোষণা দেয়। বিভিন্ন পর্যায় পেরিয়ে এসে আট বছরের মাথায় প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়েছে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না থাকলেও বর্তমানে আলোচিত এ মেগা প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ। নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, অর্থায়নের উৎস নিশ্চিত না হওয়ায় মূলত এই প্রকল্পটি থেমে গেছে। তবে সোনাদিয়া থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্বে মহেশখালীর মাতারবাড়িতে বিদু্যৎকেন্দ্রের জন্য যেখানে কয়লার জেটি নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের বিষয় বিবেচনাধীন। ভূমিমন্ত্রীর মেজবানে প্রধানমন্ত্রী এদিকে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের পরিকল্পনা কমিশন এলাকায় চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানের আয়োজন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে মেজবানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার এনইসি সভা শেষে এই মেজবানের আয়োজন করা হয় বলে মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভূমিমন্ত্রী পরিকল্পনা কমিশন এলাকায় চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানের আয়োজন করেন। 'প্রধানমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হওয়ার সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করে মেজবানে উপস্থিত ছিলেন।' এছাড়া মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সচিব, পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট বিটের সাংবাদিকসহ অন্যরাও মেজবানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভা শেষে মধ্যাহ্ন বিরতিতে শুরু হওয়া মেজবানে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানি (গরুর) মাংস ছাড়াও মেজবানের মেনু্যতে আরও ছিল গরুর কালো ভুনা, খাসির মাংস, লাউ দিয়ে বুটের ডাল, নলার ঝোল, বোরহানি ও সালাদ।