দিনাজপুরের বিরলে রূপালী বাংলা জুট মিলে তিন সপ্তাহের বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে একজন নিহত হয়েছে।
বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় এ ঘটনায় পুলিশের গুলিতে স্থানীয় এক চা বিক্রেতা নিহত হয়েছেন।
নিহত সুরত আলী (৪০) বিরল উপজেলার হুসনা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে এবং জুট মিলের পাশের একটি চায়ের দোকানদার।
বিশ্বে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারের টানা বন্ধের ঘোষণা এবং ঘরে থাকার নির্দেশের মধ্যে বকেয়া বেতন আদায়ে আন্দোলন নামে এ জুট মিলের শ্রমিকরা।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী এ পরিস্থিতিকে 'যুদ্ধ' সঙ্গে তুলনা করে বলেন, 'এ যুদ্ধে আপনার দায়িত্ব ঘরে থাকা।'
মিলের শ্রমিক জুলফিকার জানান, বুধবার বিকালে মিল বন্ধের কোনো নোটিশ না পেয়ে চলমান পরিস্থিতিতে বকেয়া বেতনের দাবিতে মিলের অফিসের সামনে অবস্থান নেয় শ্রমিকরা।
জুটমিলের মালিক 'এক সপ্তাহের বেশি বেতন দিতে না চাওয়ায়' শ্রমিকরা তা না মেনে বিক্ষোভ করতে থাকে বলে জানান তিনি।
মালিক-শ্রমিকের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করে ভেস্তে গেলে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আব্দুল লতিফ ঘটনাস্থলে আসেন।
মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আব্দুল লতিফ দাবি করেন, সমঝোতা ব্যর্থ হলে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তাদের সঙ্গে স্থানীয় কিছু লোকও যোগ দেয়।
তারা বিক্ষোভ করে এবং মিলে ভাঙচুর শুরু করে বলেন তিনি।
'পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ ও পরে টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।'
বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের জরুরি মেডিকেল অফিসার ডা. তানজিমুল হক বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই সুরত আলী মারা যান। তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছররা গুলি লাগায় তিনি নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় আহতদের মধ্যে দুইজন বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে এবং একজনকে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
পুলিশ কেন গুলি চালালো জানতে চাইলে বিরল থানার ওসি শেখ মো. নাসিম হাবিব জানান, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর আক্রমণ করায় বাধ্য হয়ে প্রথমে লাঠিচার্জ করে।
'পরে ৩ রাউন্ড টিয়ারসেল এবং শেষে ১২ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়।'
বিক্ষোভকারীদের হামলায় তিন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।