পেশাদার ও বিনয়ী আচরণ করুন, পুলিশ সদস্যদের আইজিপির বার্তা

প্রকাশ | ২৯ মার্চ ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
নভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের অত্যন্ত সহনশীলতা, পেশাদারিত্ব ও বিনয়ের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন পুলিশের আইজি জাবেদ পাটোয়ারী। বৃহস্পতিবার থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রায় সোয়া দুই লাখ পুলিশের কাছে এই বার্তা পাঠানো হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি সোহেল রানা। হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা পালন করতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ সদস্যরা সাধারণ পথচারী, রিকশাচালক, দিনমজুরসহ নানা পেশার মানুষকে লাঠিপেটা, কান ধরে উঠবস করানোর অভিযোগ আসার পর এই বার্তা পাঠানো হচ্ছে। বিভিন্ন সংবাদপত্র, অনলাইন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে পুলিশ এসব তথ্য পেয়েছে বলে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানান হয়। শনিবার সকালে সোহেল রানা জানান, মাঠে কাজ করা কিছু পুলিশ সদস্যের আচরণে নানা প্রশ্ন উঠেছে। এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে আইজির এই বার্তা। 'কনস্টেবল থেকে শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিটি পুলিশ সদস্য যেন এই বার্তা ব্যক্তিগতভাবে পান, সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আইজি প্রতিটি ইউনিটপ্রধানের সঙ্গে ফোনে এবং গ্রম্নপভিত্তিক ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেছেন।' আইজির এই বার্তা ফ্যাক্স, মোবাইল, মেইলসহ সবধরনের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে হচ্ছে বলেন তিনি। 'বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি প্রতিটি সদস্যকে পেশাদারিত্ব, সহনশীল, বিনয়ী আচরণ করতে বলেছেন। একই সঙ্গে ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অত্যাবশ্যক- জরুরি সেবার বিষয়ে জনগণ যেন ভোগান্তিতে না পড়ে সে ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন।' এর আগে বৃহস্পতিবার সোহেল রানা বলেছিলেন, জনসাধারণের সঙ্গে যেসব পুলিশ সদস্য অসদাচরণ করেছেন তাদের বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 'এ ধরনের আচরণ অত্যন্ত বেদনাদায়ক, যেটা আশা করা উচিত নয়। এ ধরনের করতে থাকলে জরুরি সেবায় নিয়েজিত পুলিশ সদস্যদের প্রতি সাধারণ মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলবে।' তিনি বলেন, বার্তা দেওয়ার পর পরিস্থিতি অনেক উন্নতি হচ্ছে। নতুন করে কোনো ঘটনার খবর আসেনি। তবে কেউ কেউ মিথ্য তথ্য দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন পুলিশের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান। এই কর্মকর্তা বলেন, রাজবাড়ীর এক ঘটনায় পুলিশের এক কর্মকর্তা দায়িত্বপালন করতে গিয়ে এক ব্যক্তিকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় চলাচলে নিষেধাজ্ঞার কথা স্মরণ করিয়ে দিলে ওই ব্যক্তি এক প্রভাবশালীর স্বজন বলে পরিচয় দেন, যা ঠিক ছিল না। কিশোরগঞ্জের এক প্রবাসী অভিযোগ করেছিলেন, কোয়ারেন্টিনে না থাকার শর্তে পুলিশ তার কাছে ঘুষ নিয়েছে, যার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। পরে পুলিশ ওই প্রবাসীকে কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়ে দেয়। সিলেটের এক বাজারের জনসমাগমে বাধা দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার পুলিশ বেশ বিপাকে পড়েছিল। জনতা পুলিশের উপর চড়াও হয়েছিল। এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি প্রতিদিন হতে হচ্ছে জানিয়ে ওই কর্মকর্তা জানান, প্রতিটি বিষয় পুলিশ মনিটর করছে এবং তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ এই পরিস্থিতিতে মাঠে থাকা পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতা করার জন্য দেশের প্রতিটি নাগরিককে এআইজি সোহেল রানা অনুরোধ জানিয়েছেন।