ত্রাণের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ল দুই হাজার মানুষ

প্রকাশ | ০৩ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
করোনায় কর্মস্থল বন্ধ। তাই একটু সহায়তার আশায় রাজধানীর সড়কগুলোতে অসহায় খেটে খাওয়া মানুষের ভিড়। ছবিটি বৃহস্পতিবার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তোলা -যাযাদি
তিন বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৬০ বছরের বৃদ্ধ। সকাল থেকে গাদাগাদি করে বসে আছেন কিশোরগঞ্জ খাদ্য গুদামের আঙিনা ও রাস্তার দু'পাশে। সামান্য খাদ্য সহায়তার জন্য তাদের এ অপেক্ষা। খাদ্য গুদামের এখানে-সেখানে ফাঁকা জায়গায় পাঁচজন থেকে শুরু করে ২০-২৫ জনের জটলা। আর খাদ্য বিতরণ শুরু হতে না হতেই হুমড়ি খেয়ে পড়ে প্রায় দুই হাজার মানুষ। কিশোরগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আরিফুল ইসলাম আরজু বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় সরকারি খাদ্য গুদাম এলাকায় প্রায় দুই হাজার হতদরিদ্র মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন। সেখানে খাদ্য সহায়তা নিতে আসা বেশিরভাগ মানুষই মানেননি সামাজিক দূরত্ব। এতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শত শত নারী-পুরষ ও শিশু মুখে মাস্ক ছাড়া সংগ্রহ করেন খাদ্যসামগ্রী। কাউন্সিলর আরিফুল ইসলাম আরজু জানান, 'খাদ্য বিতরণের জন্য আগেই কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। সবাইকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে অনুরোধ করা হলেও কেউ তা মানছে না।' জানা গেছে, করোনাভাইরাসের ফলে অঘোষিত লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে অনেকের। এ অবস্থায় বিভিন্ন এলাকায় দরিদ্রদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন। সরকারি সহায়তা অপ্রতুল হওয়ায় মিটছে না চাহিদা। এ অবস্থায় কোথাও খাদ্যসামগ্রী বিতরণের খবর পেলেই সেখানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে শত শত মানুষ। ফলে খাদ্য বিতরণে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিতরণকারীদের। অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হচ্ছে না সামাজিক সুরক্ষা ও দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া হতদরিদ্র প্রায় দুই হাজার মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন কিশোরগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর মো. আরিফুল ইসলাম আরজু। বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের একরামপুর খাদ্যগুদাম এলাকায় ৭নং ওয়ার্ডের হতদরিদ্র মানুষের মধ্যে প্রত্যেককে তিন কেজি চাল, দুই কেজি আলু ও আধা কেজি পেঁয়াজ বিতরণ করা হয়। স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. আলাউদ্দিনের সহযোগিতায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে এসব খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয় বলে জানান ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম আরজু। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান জানান, খাদ্য সহায়তা বিতরণের সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং সামাজিক সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে বার বার তাগাদা দেওয়া হলেও অনেকেই তা মানছে না। এতে করোনা আক্রান্তের ঝুঁকি বাড়ছে। এ ব্যাপারে আজই জরুরি সভা হয়েছে। কালকের মধ্যেই আইন-শৃংখলা বাহিনী আরও কঠোর হবে। জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী বলেন, মানুষকে অকারণে বাইরে থাকা ঠেকাতে এবং খাদ্য সহায়তা দেওয়ার সময় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে আজই কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে প্রশাসন। এরই মধ্যে শহরে মাইকিং করা হচ্ছে। এরপরও কেউ সরকারি নির্দেশ অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।