সরবরাহ স্বাভাবিক, তবুও বাজার অস্থির

প্রকাশ | ০৯ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
রাজধানীর একটি বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সবজির দোকান -ফাইল ছবি
করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে বাজারে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও নিত্যপণ্যের দাম চড়া। ঊর্ধ্বমুখী শাক সবজি ও মাছের দাম। বুধবার রাজধানীর কাঁচাবাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। দেখা যায়, করোনা আতঙ্কে বাজারে ক্রেতা কম। এরই মধ্যে যেসব ক্রেতা আসছেন তারা নিরাপদ দূরত্ব বজায় না রেখে বাজার করছেন। বাজারে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাছ ও সবজির দাম গত সপ্তাহের চেয়ে বেড়েছে। রাজধানীর কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি পণ্যের দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। বুধবার নতুন বাজার কাঁচাবাজার ঘুরে পাওয়া গেছে এসব তথ্য। বরবটি প্রতি কেজি ৬০, পটল ৬০, টমেটো ৩০, করলা ৪০, বেগুন ৬০, শিম ৪০, পেঁপে ৩০, কচুরলতি ৬০, কচুরমুখি ৫০, আলু ২৫, গাজর ৩০, মিষ্টি কুমড়া (প্রতি পিস) ৪০, লাউ ৫০ (প্রতি পিস), ডিম প্রতি পিস ১০, ফুলকপি ৫০ ও কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও গরুর মাংস ৫৫০ থেকে ৬০০ ও ব্রয়লার মুরগি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে, মাছের দামও বেড়েছে। প্রতি কেজি ইলিশ মাছ ৯০০-১২০০, দেশি রুই ২৫০-৩০০, কোরাল মাছ প্রতি কেজি ৪০০, টেংরা ৪০০, শিং মাছ ২৫০, তেলাপিয়া ১৬০ ও প্রতি কেজি চিংড়ি মাছ বিক্রি হয়েছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। বাজার করতে আসা ক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও কিছুটা দাম বৃদ্ধি হয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ রয়েছে, কিন্তু ক্রেতা কম। নতুন বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মো. জসিম উদ্দিন বলেন, পরিবহণ খরচ কিছুটা বাড়ায় দামও একটু বেড়েছে। এ কাঁচাবাজারের বিক্রেতা রাহাত সরকার বলেন, সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও ক্রেতা কম থাকায় সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। আরেক বিক্রেতা মফিজ মিয়া বলেন, প্রতিটি পণ্যে দাম কিছুটা বেড়েছে। ক্রেতা বাজারে কম। চট্টগ্রামের বাজার: চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানান, বেশিরভাগ ক্রেতার মুখে মাস্ক। কারও কারও হাতে গস্নাভস। কিন্তু করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চার ফুটের দূরত্বের বিষয়টি জানলেও মানা যেন কঠিন। পবিত্র শবেবরাতকে ঘিরে নগরের কাঁচাবাজার, মুদি দোকান গুলোতে বুধবারের চিত্র ছিল এমনই। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত বন্ধ থাকায় দিনের বেলা ক্রেতারা কেনাকাটা সারতে অভ্যস্ত হচ্ছেন বলে জানান দোকানিরা। কোতোয়ালী থানাধীন আসকার দীঘির দক্ষিণপাড়ের কাঁচাবাজারে মুরগির দোকানে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১১০ টাকা। প্রতি ডজন মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে মাত্র ৮৫ টাকা। দোকানি মো. আলমগীর জানান, অন্যান্য বছর শবেবরাতে যে পরিমাণ মুরগি আর ডিম বিক্রি হতো এবার তার সিকি ভাগও হয়নি। করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসা খারাপ। মুদি দোকানে বেশি চাহিদা হালুয়া-রুটির উপকরণ আটা, ময়দা, সুজি, ঘি, চিনি, কিসমিস, বাদাম, দারুচিনি, তেজপাতা, এলাচি, পোলাও চাল ইত্যাদির। বেশি বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, সয়াবিন তেল, লবণ ইত্যাদি। দোকানিরা জানান, বিভিন্ন বড় বড় শিল্পগ্রম্নপের প্যাকেটজাত ভোগ্যপণ্যের চাহিদাই বেশি। এসব পণ্যে মান, ওজন ও মূল্যের বিষয়ে আস্থা বেশি ভোক্তাদের। নিম্নআয়ের লোকজনই খোলা পণ্য কিনছেন। খুচরায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। কাজীর দেউড়ি কাঁচাবাজারে মাছ বিক্রেতা মিন্টু সরকার জানান, বাজারে মাছের সরবরাহ ভালো, দামও কিছুটা কম। মোটামুটি ভালোই চলছে বেচাকেনা। শবেবরাত উপলক্ষে মাংসের চাহিদা বেশি হলেও দাম অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানান দোকানিরা। বাজারে কেনাকাটা করতে আসা গৃহিণী রহিমা বেগম বলেন, প্রতি বছর চট্টগ্রামের রেওয়াজ অনুযায়ী মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে বেশ কিছু কোরমা-পোলাও, হালুয়া রুটি পাঠাতাম। এবার করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে ঘরে থাকা কর্মসূচির কারণে এসব পাঠাতে বারণ করেছে। তাই কম বাজার করছি। আবদুল করিম জানান, 'শবেবরাতে তিন দিন নফল রোজা রাখছি সপরিবারে। তাই সেহরি, ইফতারের জন্য কিছু কেনাকাটা করতে এসেছি অনিচ্ছা সত্ত্বেও। খেজুর, লেবু, পুদিনা পাতা, মুড়ি, চিড়া, শসা, সবজি কিনেছি।'