পুলিশের চেষ্টায় প্রাণ বাঁচল মা-মেয়ের

প্রকাশ | ০৯ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বুধবার ভোরে হাসপাতালে জীবন রক্ষায় সহায়তাকারী পুলিশ সদস্যের কোলে সেই নবজাতক -যাযাদি
রাত সাড়ে ৩টা। হঠাৎ উঠা প্রসব বেদনায় কাতর স্ত্রী প্রান্তি, অজ্ঞান হওয়ার অবস্থা প্রায়। এই দুঃসময়ে কি করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না স্বামী শিপন সেন। পাগলের মতো ছুটে গেলেন রাস্তায়। কিন্তু ফাঁকা রাস্তা, কেউ নেই। দুঃসময়ের কাছে হাল ছেড়ে দিয়ে শিপন যখন ভাবছিলেন সবশেষ, ঠিক তখন ঘটনাস্থলে এসে হাজির হন দুই পুলিশ সদস্য। বিষয়টা জেনেই অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে থানার টহল গাড়িতেই ওই প্রসূতিকে নগরের জেসমিন রেডক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতালে নিয়ে যান। বুধবার ভোরে সেখানেই ফুটফুটে এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন প্রান্তি। স্বামী শিপন সেন বলেন, 'রাত সাড়ে ৩টার দিকে প্রান্তির হঠাৎ প্রসব বেদনা ওঠে। এ অবস্থায় কী করবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। দৌড়ে আশরাফ আলী রোডের মাথায় গেলাম, কিন্তু কোথাও কিছু চোখে পড়ছিল না। এ সময় হঠাৎ দুই পুলিশ সদস্য আমার দিকে এগিয়ে আসলেন। এত রাতে এখানে কী করছি জানতে চাইলে তাদের পুরোঘটনা খুলে বললাম। তারা নিজেরাই ফোন করে গাড়ির ব্যবস্থা করলেন। হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ডাক্তার-নার্স ডেকে নিশ্চিত করলেন তাৎক্ষণিক চিকিৎসার। অবশেষে আমাদের সব উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দূর করে আমার সন্তার পৃথিবীর মুখ দেখে। এই মানুষ দুটির প্রতি আমি আমার পরিবার সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, লকডাউন শুরুর পর থেকে আমাদের পুলিশ সদস্যরা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে কাজ করে যাচ্ছে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে হঠাৎ এক ফোন এলো আশরাফ আলী রোড থেকে। প্রসব বেদনা উঠেছে এক নারীর। সঙ্গে অন্যান্য সমস্যাও। চিকিৎসা নিতে হবে, কিন্তু পাশে ডাক্তার নেই। হাসপাতালে নিতে হবে, কিন্তু রাস্তায় গাড়ি নেই। তিনি বলেন, টিম কোতোয়ালির দুই সদস্য এএসআই আজিজুল ইসলাম ও সুকুমার আমাকে বিষয়টি জানান। সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির ব্যবস্থা করে হাসপাতালে ছোটেন তারা। পুলিশকে দেখে একটু আন্তরিকতা বেশি দেখাতে পারে সে চিন্তা থেকে তারা হাসপাতালে দৌড়ঝাঁপ করলেন নিজেরাই। প্রায় তিন ঘণ্টার কষ্ট সার্থক করে ভোরে ফুটফুটে এক বাচ্চার জন্ম দিয়েছেন ওই মা। মা-মেয়ে দু'জনেই সুস্থ আছে।