শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তবুও বাজারে ভিড় করে ঝুঁকি বাড়াচ্ছে মানুষ

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৭ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে নিরাপদ দূরত্বে থাকার জন্য নানা প্রচারণা চালালেও, তা মানছেন না অনেকেই। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি বাজারে ক্রেতাদের এভাবেই জড়ো হয়ে সবজি কিনতে দেখা যায় -যাযাদি

বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার প্রথম পর্যায়ে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। পরবর্তী সময়ে তা দুই দফা বাড়িয়ে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হয়েছে। যার মূল কারণ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বাজায় নিশ্চিত করা। কিন্তু কে শোনে কার কথা। এই পরিস্থিতিতেও প্রতিদিন রীতিমতো বাজারে ভিড় জমাচ্ছে মানুষ।

কেউ আসছেন বাজার করতে, আবার কেউ কেউ অকারণেই ভিড় করছেন বাজারে। একসঙ্গে জড়ো হয়ে কেউ কেউ খোশগল্পও করছেন। আর যারা বাজার করছেন তাদের মধ্যেও নেই কোনো ধরনের সচেতনতা। বলতে গেলে ক্রেতার সঙ্গে অন্য ক্রেতাদের, দোকানির স্পর্শ লাগছেই। কাঁচাবাজারসহ নিত্যপণ্যের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় দিন দিন বাড়ছে। এক একটি দোকান ঘিরে রেখেছেন ৪-৫ জন ক্রেতা। এসব কারণে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি।

পাশাপাশি স্বীকৃত কাঁচাবাজার ও সুপারশপগুলো প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা রাখার কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এ ছাড়া বিভিন্ন পাড়া ও মহলস্নার নিত্যপণ্যের দোকানে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত খোলা রাখার নিয়ম মানলেও মানুষের ভিড় কোনোভাবেই কমানো যাচ্ছে না। এতে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি। বাড্ডার একটি কাঁচাবাজারে বৃহস্পতিবার দেখা গেছে, অন্য স্বাভাবিক সময়ের মতোই বাজারে মানুষের উপস্থিতি। ভিড়াভিড়ি করে সবাই বাজার করছেন। যা দেখে বোঝার উপায় নেই যে করোনার কারণে দেশে সাধারণ ছুটি চলছে। সাধারণ মানুষও যেন বিষয়টি আমলেই নিচ্ছে না।

বাজার করতে আসা একজন শরিফ উদ্দিন বলেন, মাস্ক মুখে দিয়েই তো বাজারে এসেছি। আমাদের কি নিত্যপণ্য কিনতে হবে না? বাজারে তো একটু ঘোরাঘুরি, দরদাম করেই সদাই কিনতে হয়। যে কারণে সবাই একটু ঘুরছে। এ ছাড়া বাসায় থাকতে থাকতে সবাই অনেকটা ক্লান্ত। তাই বাইরে এলে একটু বেশি সময় কাটাতে চায় সবাই। অহেতুুক একটু ঘোরাঘুরিও হয়।

দোকানি এরশাদ আলী বলেন, একই ধরনের কথা। তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশ অনুযায়ীই আমরা দোকান খুলি এবং বন্ধ করি। ক্রেতারা বাজার করে, কিন্তু তারা যদি নিয়ম না মেনে বেশি ভিড় করে তাহলে আমরা কী করতে পারি। একাধিক কাস্টমার একসঙ্গে ভিড় করলেও তো আমরা বলতে পারছি না আপনারা চলে যান, এখানে ভিড় করবেন না। সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে।

অন্যদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার সরকারি নির্দেশনা সত্ত্বেও অহেতুক, অকারণে বাইরে বের হওয়াদের জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবুও মানুষের বাইরে বের হওয়া থামানোই যাচ্ছে না।

এ ছাড়া সারাদেশে সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার হয়েছে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের জন্য। কিন্তু ত্রাণ নিতে, টিসিবি থেকে পণ্য কিনতে, ১০ টাকা কেজির চাল বিক্রিতে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। রীতিমতো ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে কার আগে কে চাল নেবে সেই চেষ্টা সবার। সংশ্লিষ্টরা বারবার বলার পরেও ব্যর্থ হচ্ছেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে।

এদিকে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে সংকটময় পরিস্থিতিতে অনলাইনে যেসব নিত্যপণ্য নয় এমন পণ্যের বাজার থমকে গেলেও জমে উঠেছে নিত্যপণ্যের বাজার। এই পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস তুলনামূলক ভালো বেচা-কেনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে মুদি পণ্যগুলো (নিত্যপ্রয়োজনীয়) ছাড়া অন্যান্য পণ্যের বিক্রি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে ডেলিভারি পদ্ধতি নানাভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং ডেলিভারি ম্যানের কিছুটা সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ডেলিভারিম্যান সংকট থাকায় এবং সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যে ডাকসেবা বন্ধ থাকায় ডেলিভারিসেবা প্রায় বন্ধ আছে নিত্যপণ্য ছাড়া অন্যদের। ঢাকার বাইরে থেকে তারা অনেক ক্রয় অর্ডার পেয়ে থাকেন। কিন্তু ডাক ও পরিবহণসেবা বন্ধ থাকায় তারা গ্রাহকের কাছে পণ্যগুলো পৌঁছে দিতে পারছেন না। তবে অনলাইনে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী বিক্রি কমেনি। ঢাকাসহ অন্য শহরে অনলাইনে নিত্যপণ্য কেনার চাহিদা বাড়ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<96443 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1