করমজলে বাটাগুর বাসকার ৩৪টি বাচ্চা ফুটেছে

প্রকাশ | ১৪ মে ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সুন্দরবনের করমজল কৃত্রিম বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্রে ডিম থেকে ফোটা বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির কচ্ছপ 'বাটাগুর বাসকা' -বাংলানিউজ
পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল কৃত্রিম বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্রে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির কচ্ছপ 'বাটাগুর বাসকা'-র ৩৪টি বাচ্চা ফুটেছে। বুধবার সকালে এ বাচ্চাগুলো ডিম থেকে ফুটে বের হয়েছে। বাচ্চাগুলোকে কচ্ছপের জন্য তৈরি 'হ্যাচিং প্যানে' রাখা হয়েছে। ছয় মাস পরে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রজননকেন্দ্রটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির। গত ১০ মার্চ একটি কচ্ছপের দেওয়া ৩৫টি ডিম থেকে ওই ৩৪টি বাচ্চা ফুটল। এর আগেও এই কেন্দ্রে পাঁচবার বাটাগু বাসকার বাচ্চা ফুটেছে। ২০১৭ সালে দুটি কচ্ছপের ৬৩টি ডিম থেকে ৫৭টি, ২০১৮ সালে দুটি কচ্ছপের ৪৬টি ডিম থেকে ২১টি এবং সর্বশেষ গত বছর একটি কচ্ছপের ৩২টি ডিম থেকে ৩২টি বাচ্চা পাওয়া যায়। কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, 'গত ১০ মার্চ কচ্ছপটি ৩৫টি ডিম পাড়ে। আমরা যথাযথ নিয়মে ডিমগুলোকে প্রাকৃতিক ইনকিউবেটরে রাখি। সেখান থেকে ৩৪টি বাচ্চা ফুটে বের হয়েছে। বাচ্চাগুলোকে হ্যাচিং প্যানে রাখা হয়েছে। এখানে ছানাগুলোকে পর্যাপ্ত খাদ্য ও যত্ন করা হবে। ছয় মাস পরে অন্য খাচায় নেওয়া হবে এদের। গত ২৭ মার্চ আরও একটি কচ্ছপ ২১টি ডিম দেয়। আশা করছি, ওই ডিমগুলো থেকে আগামী ২৭ বা ২৮ মে বাচ্চা পাওয়া যাবে।' ২০০০ সালের দিকে বন্যপ্রাণী গবেষকরা মনে করেছিলেন, পৃথিবীতে আর বাটাগুর বাসকার কোনো অস্তিত্ব নেই। পরে ২০০৮ সালে গবেষকরা প্রকৃতিতে বাটাগুর বাসকা আছে কি না তা খুঁজতে শুরু করেন। খুঁজতে খুঁজতে নোয়াখালী ও বরিশালের বিভিন্ন জলাশয়ে ৮টি বাটাগুর বাসকা পাওয়া যায়। যার মধ্যে ৪টি পুরুষ ও ৪টি স্ত্রী। পরে প্রজননের জন্য কচ্ছপগুলোকে গাজীপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। বন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তরা বাটাগুর বাসকাগুলোকে নিবিড়ভাবে লালন-পালন ও প্রজননের চেষ্টা চালান। তেমন সাফল্য না পাওয়া গেলেও কয়েক বছরে প্রায় ৯৪টি বাচ্চা দিয়েছিল ৮টি মা কচ্ছপ। সেখানে ভালো সাড়া না পাওয়ায় ২০১৪ সালে মূল ৮টি বাটাগুর বাসকাকে তাদের জন্ম দেওয়া ৯৪টি ছানাসহ করমজল কৃত্রিম প্রজননকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। চারটির ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার পরে বর্তমানে দুই শতাধিক কচ্ছপ রয়েছে। কয়েকটি কচ্ছপ সুন্দরবনেও অবমুক্ত করেছে সুন্দরবন বন বিভাগ।