শিমুলিয়ায় এ যেন ঈদ আনন্দ!

প্রকাশ | ১৬ মে ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটে শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গমুখী হাজারো মানুষের ভিড় -বিডিনিউজ
মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে এবার দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলামুখী মানুষের ভিড় সৃষ্টি হয়, যেমন হয় ঈদের সময়। লৌহজং উপজেলার এই ঘাট দিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ঢাকামুখী মানুষের স্রোত ছিল। শুক্রবার সে চিত্র উলটে গেছে। এদিন সকালে শিমুলিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়- দক্ষিণবঙ্গমুখী হাজারো মানুষ ফেরির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। ফেরিঘাটে আসামাত্রই লোকজন ওঠার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। হুড়োহুড়ি করে ফেরিতে কোনোরকমে নিজের জায়গা করে নিচ্ছে; এরপর গাদাগাদি করেই পার হচ্ছে পদ্মা। লোকজনের চাপে ফেরিতে উঠতে বেগ পেতে হচ্ছিল গাড়িগুলোকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘ হচ্ছিল দক্ষিণবঙ্গমুখী গাড়ির লাইন। বিআইডবিস্নউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের এজিএম মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, 'আজ শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গমুখী যাত্রীদের ঢল নেমেছে। ফলে ১৩টি ফেরি চলাচল করলেও দক্ষিণবঙ্গমুখী গাড়ি ও যাত্রীর চাপে লোডিং-আনলোডিংয়ে সমস্যা হচ্ছে। পন্টুনে বিশৃঙ্খলার কারণে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে।' লোকজনের ভিড়ে ফেরিতে উঠতে না পারায় শিমুলিয়া ঘাট থেকে ছোট ছোট গাড়ি বা প্রাইভেটকারের লাইন দেড় কিলোমিটার দূরে চন্দ্রের বাড়ির কাছে চলে গেছে বলে জানান তিনি। এই যখন শিমুলিয়া ঘাটের অবস্থা, তখন অনেককেই ঘাট থেকে একটু দূরে পাশে দাঁড়িয়ে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে দেখা গেছে। ফেরিতে গাদাগাদি করে পার হবেন, না কি একটু হালকা হলে ফেরিতে উঠবেন- এই ছিল তাদের ভাবনা। আবার যারা দক্ষিণবঙ্গ থেকে ঢাকার দিকে ফিরছিলেন তাদেরও পড়েতে হয়েছে বিপাকে। হঠাৎ দক্ষিণবঙ্গমুখী ঢলের কারণে জানতে চাইলে মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক সিরাজুল কবির বলেন, 'মনে হচ্ছে দক্ষিণবঙ্গমুখী শত শত লোক আজ (শুক্রবার) শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি দিয়ে ঈদ পালন করতে গ্রামের বাড়িতে ছুটছে। এই তো মাত্র কয়েক দিন আগেও ঢাকামুখী যাত্রীর ঢল ছিল, আর আজ শুরু হয়েছে দক্ষিণবঙ্গমুখী যাত্রীর ঢল। দেখলে মনে হয় এরা ঈদের শপিং করতে ঢাকায় গিয়েছিল। শপিং শেষে এখন তারা বাড়ি ফিরছে। তিনি আরও জানান, 'তবে আসল কথা হচ্ছে যে, সরকার সাধারণ ছুটি বাড়িয়েছে। তাই পোশাক কারখানা ও দোকানপাট পুরোপুরি না খোলায় তারা এখন হয়তো আবার বাড়ি ছুটছে। তাছাড়া সরকার ঘোষণা করেছে ঈদে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করতে হবে, বাড়ি যাওয়া যাবে না। তাই হয়েতো এ সব লোকজন আগেই ছুটছে বাড়ির উদ্দেশে।' এভাবে গাদাগাদি করে পারাপারে কারণে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা যে বাড়ছে, সে কথাও সিরাজুল কবির বলেন। মাওয়া ট্রাফিক জোনের টিআই হিলাল উদ্দিন বলেন, 'সকাল থেকে দক্ষিণবঙ্গমুখী যাত্রীর ঢলের সঙ্গে ছোট ছোট গাড়ির চাপ বেড়েছে। এক-দেড় কিলোমিটার ছড়িয়ে পড়েছে এ ছোট গাড়ির চাপ। ঢাকা থেকে লোকজন ছোট ছোট গাড়িতে করে মাওয়ায় এসে ফেরি পার হচ্ছে।' ঘাটের এ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কারণ জানতে চাইলে ঘাটের এজিএম শফিকুল বলেন, 'আমাদের একজন স্টাফ ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এখন বাকি স্টাফরা ভয়ে ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না। তারা গাদাগাদির মধ্যে যেতে চাইছে না।'