ডিএমপি কমিশনারের সতকর্তা

ট্রাফিক আইন পুলিশ ভঙ্গ করলেও রেহাই নেই

আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, সবাইকে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে। নিজেদের বদলাতে হবে, অন্যকেও বদলে দিতে হবে। উন্নত বিশ্বে রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ নেই

প্রকাশ | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
পরিবহন মালিক-শ্রমিক-পথচারীরা ট্রাফিক আইন মানেন না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থাও আইন মানে না। আমরা কেউ আইন মানতে চাই না। তাহলে কীভাবে সড়কে আইনশৃঙ্খলা ফিরে আসবে? পুলিশের কোনো সদস্য যদি ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি চলবে।’ শনিবার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগ চত্বর এলাকায় (ট্রাফিক পুলিশ বক্সের পেছনে) ট্রাফিক সচেতনতামূলক কমর্সূচি অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমাদের সবাইকে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে। নিজেদের বদলাতে হবে, অন্যকেও বদলে দিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘উন্নত বিশ্বে রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ নেই, আমাদের দুভার্গ্য হাত উঁচু করে রাস্তায় দঁাড়িয়ে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। দিনে কমপক্ষে ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা অমানবিক পরিশ্রম করছেন আমাদের ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। রোদ, বৃষ্টি ও ঝড়ে ডিউটি করছেন তারা। এরপরও ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে অনেক ধরনের প্রভাবশালীর চাপ সহ্য করতে হয়। অনেকে পেছন থেকে টেনে ধরতে চায়। কখনও কখনও আমাদের আপস করতে হয়। কিন্তু সেটা আমরা চাই না।’ বাংলাদেশ বাস মালিক সমিতির মহাসচিব এনায়েতউল্লাহর উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘পাল্লা দিয়ে গাড়ি চলাচল, যেখানে সেখানে দঁাড়িয়ে লোক তোলা বন্ধ করতে হবে। আপনি বাস চালকদের সঙ্গে মিটিং করেন, প্রয়োজনে আমাদের সঙ্গে নেন। তাদের উদ্বুদ্ধ করা দরকার যে, এক বাস স্টপ থেকে আরেক বাস স্টপে গাড়ির দরজা বন্ধ থাকতে হবে। যারা করবে না, তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। সবোর্পরি বাস স্টপেজ ছাড়া বাস দঁাড়াতে পারবে না।’ পথচারীদের সচেতন হওয়ার আহŸান জানিয়ে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘আমরা ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করি না, আন্ডার পাস ব্যবহার করি না, মোবাইল কানে নিয়ে রাস্তা পারাপার হই।’ অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচাযর্ অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘দেশে অবকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। আমাদের রাজধানীতে পযার্প্ত আন্ডার পাস নেই। এগুলো যদি ব্যবস্থা করা না যায়, তবে দেশে বৃহৎ এই জনগোষ্ঠীকে শুধু জরিমানা করে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। বতর্মানে ট্রাফিক আইন নিয়ন্ত্রণের জন্য যে অবকাঠামো রয়েছে, সেটি আরও দ্বিগুণ করতে হবে।’ নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘৯০ শতাংশ মানুষ আইন মানে না। এই পরিস্থিতিতে পুলিশের একার পক্ষে সেটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। চালক, মালিকসহ সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে তিন মাস সময়-সীমা বেধে দেয়া হোক। এ সময় নিজেরাই ট্রাফিক আইন মানার বিষয়ে চালক ও শ্রমিকদের শেখাবে।