প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ইকবাল মাহমুদ

দুদকের ঝুঁকি নিতে কোনো ভয় নেই

সমাজে কেউই দুর্নীতি চায় না। সমাজের কিছু ব্যক্তি দুর্নীতিগ্রস্ত। তাদের সংখ্যা সত্যিই নগণ্য

প্রকাশ | ২২ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০ | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২০, ১০:১৭

যাযাদি রিপোর্ট

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, 'দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইনি দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারাবদ্ধ। সেজন্য দুদকের ঝুঁকি নিতে ভয় নেই। কোনো হুমকি-ধমকি দুদককে আইনি দায়িত্ব পালনে নিবৃত্ত করতে পারেনি।' শনিবার দুদকের ষোড়শ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন দুদক চেয়ারম্যান। ইকবাল মাহমুদ বলেন, সমাজে কেউই দুর্নীতি চায় না। সমাজের কিছু ব্যক্তি দুর্নীতিগ্রস্ত। তাদের সংখ্যা সত্যিই নগণ্য। তাই সমাজের কাছে আমাদের অঙ্গীকার থাকতে হবে। সবার প্রতি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে হবে। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি মানে অপরাধ বা অপরাধীর সঙ্গে আপস নয়। সব ভয়ভীতি, লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে হবে। সবাই মিলে শেষ দিন পর্যন্ত জনগণের কল্যাণে দুর্নীতি প্রশমন, দমন, প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হবে। এটাই হবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার। দুর্নীতিমুক্ত নাগরিক গড়তে পরিবারের পরেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরে নৈতিক মূল্যবোধ বিকশিত হয় এমন শিক্ষার প্রয়োজন উলেস্নখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, একটি মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন জাতি গঠনে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। দুদকে কর্মরত নিজেদের পরিশুদ্ধ করায় চেষ্টা করেন সবসময় এমন দাবি করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমরা দায়িত্ব নিয়ে বলেছিলাম কমিশন সবসময় গঠনমূলক সমালোচনাকে স্বাগত জানায়। কারণ গঠনমূলক সমালোচনাই কর্মপ্রক্রিয়াকে শাণিত করে। সঠিক পথ দেখায়। সবাই সবকিছু জানে না, তাই অন্য কেউ যদি ভালো পথ দেখায় তা গ্রহণ করতে আমাদের আপত্তি নেই। আমরা সমালোচনার প্রতি-উত্তর দেই না বরং তা গ্রহণ করি। দুর্নীতির মূলোৎপাটনে দেশের সর্বস্তরের মানুষের সম্পৃক্ততার প্রয়োজন উলেস্নখ করে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল বলেন, করোনা মহামারিতেও দেশের দুষ্টুচক্রের কালো হাত থেমে নেই। সে কারণেই মাস্ক কেলেঙ্কারি, করোনা টেস্ট জালিয়াতি, ত্রাণসামগ্রী আত্মসাৎ, চিকিৎসা জালিয়াতির মতো ঘটনা আমাদের সামনে এসেছে। আমরাও দায়িত্ব পালনে পিছপা হইনি। তাদের বিরুদ্ধে আইনি উদ্যোগ গ্রহণ করি। এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই আমাদের ৭০ জনেরও বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তিনজন প্রতিশ্রম্নতিশীল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে হারিয়েছি। তারপরও দুর্নীতিপরায়ণদের সুখকর সময় পার করতে দেওয়া হচ্ছে না। সভায় দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম বলেন, শিক্ষিত হয়েও যারা দুর্নীতি করছেন, তারা জঘন্য অমানবিক অপরাধ করছেন। সবাই সন্তানদের জজ-ব্যারিস্টার, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার, সরকারি বড় কর্মকর্তা বানাতে চান। এটা ভালো কথা। তবে সন্তানদের মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার কাজটিও একই সঙ্গে বাবা-মাকে করতে হবে। দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত বলেন, দুদকের সব কার্যক্রম ডিজিটালি সম্পন্ন করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির কারণেই দুদকের ৯০ শতাংশেরও বেশি নথি ই-নথির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দুদকের বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত অনুবিভাগের মহাপরিচালক সাঈদ মাহবুব খান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম সোহেল, গোয়েন্দা অনুবিভাগের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী, ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. আক্তার হোসেন, যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নাজমুস সায়াদাত প্রমুখ।